Coronavirus in India

তাড়াহুড়ো নয় স্কুল খোলায়

গত এক বছরের উপরে বন্ধ স্কুল ও কলেজ। করোনা সংক্রমণের প্রথম ধাক্কার পরে কিছু রাজ্য স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২১ ০৬:৫৮
Share:

ফাইল চিত্র।

আপাতত খুলছে না স্কুল। কেন্দ্রীয় সরকার ছোটদের ঘরবন্দি দশা আরও দীর্ঘ হওয়ার ইঙ্গিত দিলেও বয়স্কদের জন্য সুখবর। যে প্রবীণেরা টিকার দু’টি ডোজ় নিয়েছেন, যাঁরা নীরোগ, ক্রনিক কোনও রোগে ভোগেন না— তাঁদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধা নেই বলে মঙ্গলবার জানালেন নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পল।

Advertisement

গত এক বছরের উপরে বন্ধ স্কুল ও কলেজ। করোনা সংক্রমণের প্রথম ধাক্কার পরে কিছু রাজ্য স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আসতেই ফের বন্ধ করে দিতে হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। স্কুলে যাওয়া ছোটদের মধ্যে সংক্রমণ দ্রুত ছড়াতে পারে, তাদের থেকে বাড়ির প্রবীণেরা আক্রান্ত হতে পারেন— মূলত এমন আশঙ্কা থেকেই স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে দিল্লি এমস হাসপাতালের সেরো সমীক্ষা দেখিয়েছে, বড়দের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে আক্রান্ত হয়েছে ছোটরা। দেশের চার প্রান্তে করা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ওই এলাকাগুলিতে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা (দুই থেকে আঠারো বছরের) করোনা আক্রান্ত হয়ে আবার সুস্থ হয়ে গিয়েছে। মাইসুরুতে শুধু গত সপ্তাহে ১৮ বছরের নীচে ৪৭২ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। ওই শহরে গত এক বছর ধরে ছোটদের সংক্রমণের সাপ্তাহিক গড় প্রায় ৩৫০। গবেষকদের প্রশ্ন ছিল, কম-বেশি সব জায়গাতেই যখন বড়দের সঙ্গে সমান তালে ছোটরা আক্রান্ত হয়েছে, তখন স্কুল খুলে দিতে সমস্যা কোথায়?

আজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সাপ্তাহিক সাংবাদিক সম্মেলনে এই প্রশ্নের উত্তরে বিনোদ পল জানিয়ে দেন, বর্তমান অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ নয়। তিনি বলেন, ‘‘সব দিক ভেবে-চিন্তে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। স্কুল চললে ভিড় হবেই। ভাইরাস সংক্রমণ ছড়ানোর সুযোগ পাবে। যখন সংক্রমণ একেবারে কমে যাবে, সবাই সুরক্ষিত হবেন, তখনই স্কুল খোলার ঝুঁকি নেওয়া যেতে পারে।’’ ছোটদের উপরে সেরো সমীক্ষাটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জোগালেও একাধিক বিষয়ের উপরে স্কুল খোলা নির্ভর করছে বলে মনে করেন বিনোদ। তিনি বলেন, ‘‘জনতার বড় অংশকে টিকাকরণের আওতায় আনা, শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীদের সকলের টিকাকরণ হওয়ার পরেই এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব।’’

Advertisement

সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আসার সম্ভাবনাও উদ্বেগে রেখেছে কেন্দ্রকে। তাই সেই তৃতীয় ঢেউয়ের আগে স্কুল খোলার ঝুঁকি নিতে চায় না কেন্দ্র। বিনোদ পল জানান, সংক্রমণের প্রথম ধাক্কার পরে অনেক দেশ এবং ভারতের অনেক রাজ্য স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু সংক্রমণ বাড়তেই ফের তা বন্ধ করে দিতে হয়। কাজেই সরকার কোনও ভাবেই পড়ুয়া ও শিক্ষকদের এমন কোনও পরিস্থিতিতে ফেলতে চায় না, যা অনভিপ্রেত। স্কুল কবে খোলা হবে তা নিয়ে আলোচনা চললেও পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হলে তবেই কোনও ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রবীণদের অবশ্য শর্তসাপেক্ষে অনেকটা ছাড় দিয়েছে কেন্দ্র। অনুমতি দেওয়া হয়েছে বাইরে বেরোনোর। আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, যে প্রবীণেরা প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় নিয়েছেন এবং যাঁদের কোনও ক্রনিক রোগ নেই, তাঁরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতেই পারেন। সমস্ত রকমের সাবধানতা বজায় রেখে প্রবীণেরা বাড়ি থেকে বেরোতে পারেন, খোলা জায়গায় হাঁটতেও যেতে পারেন। তবে নিয়মমাফিক মাস্ক পরা, কোভিড বিধি মেনে চলার উপরে যেমন জোর দেওয়া হয়েছে, তেমনই বাজার, গণ-পরিবহণের মতো বেশি ভিড়ের জায়গা আপাতত এড়িয়ে চলার জন্য বয়স্কদের পরামর্শ দেন বিনোদ পল। তিনি বলেন, ‘‘প্রবীণেরা যাতে বাইরে বেরোতে পারেন, সেই কারণেই তাঁদের প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। তাড়াহুড়ো নয়, ধীরে ধীরে তাঁদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে হবে। তবে খুব দরকার না-হলে বাড়িতে থাকাই বাঞ্ছনীয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement