গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
দেশে মোট করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ১ কোটি ছুঁইছুঁই। যদিও মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা গত ৫ মাসে সর্বনিম্ন। সোমবার দৈনিক সংক্রমণ কমে হয়েছিল ২৭ হাজার। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ দিন তা ২২ হাজারের গণ্ডিতে নেমে গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে সাড়ে তিনশোর কিছু বেশি মানুষের। সোমবারের চেয়ে এ দিন এক ধাক্কায় কমে গিয়েছে সংক্রমণের হারও।
সোমবার দৈনিক সংক্রমণ যা ছিল তার থেকে ১৮ শতাংশ কম মঙ্গলবার। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ৬৫ জন যা গত ৭ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন। এর ফলে দেশে মোট আক্রান্ত এখন ৯৯ লক্ষ ৬ হাজার ১৬৫ জন। সংক্রমণের নিরিখে গোটা বিশ্বে এখন দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। প্রথম স্থানে আমেরিকা।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা দেশে মৃত্যু হয়েছে ৩৫৪ জনের। এর ফলে মোট ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৭০৯ জনের মৃত্যু হল দেশে। দেশের মৃতের সংখ্যার নিরিখে প্রথম পাঁচটি রাজ্য হল মহারাষ্ট্র (৪৮,২৬৯), কর্নাটক (১১,৯৫৪), তামিলনাড়ু (১১,৯০৯), দিল্লি (১০,০৭৪) এবং পশ্চিমবঙ্গ (৯,১০০)। এ ছাড়া উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ় এবং পঞ্জাবেও মৃতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ৩০ জানুয়ারি। তার পর থেকে ধাপে ধাপে ৯৪ লক্ষ ২২ হাজার ৬৩৬ জন মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এখন দেশে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৩ লক্ষ ৩৯ হাজার ৮২০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩৪ হাজার ৪৭৭ জন রোগী।
আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা বাড়লেও, স্বস্তি জোগাচ্ছে সুস্থতার হার। এ দেশে সুস্থ হওয়ার প্রবণতা আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির থেকে খানিকটা বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৫ শতাংশেরও বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। আর তাতে আশার আলো দেখছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের করোনা পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। সোমবার তা ছিল ৩.১৭ শতাংশ। মঙ্গলবার তা অনেকটা নেমে হয়েছে ২.২২ শতাংশ।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আরও পড়ুন: জন্মদিনে হলদিয়ায় ‘অরাজনৈতিক’ সভা শুভেন্দুর, ঘোষণার অপেক্ষায় অধীর রাজ্য
আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে ছুটি পেলেন বুদ্ধদেব, অ্যাম্বুল্যান্সে বাড়ির পথে
মহারাষ্ট্র শুরু থেকেই করোনা সংক্রমণ এবং মৃতের সংখ্যায় প্রথম স্থানে। দিল্লি, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যগুলিতে আচমকাই সংক্রমণের বৃদ্ধি দেখা গিয়েছিল। কিন্তু তাতে কিছুটা হলেও লাগাম পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৭৬ জন। এ ছাড়া কেরলে ২ হাজার ৭০৭, তামিলনাড়ুতে ১ হাজার ১৪১ এবং অন্ধ্রপ্রদেশে ৩০৫ জন গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
পশ্চিমবঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৮৩৪ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ৫ লক্ষ ২৩ হাজার ৬২৯ জন। যদিও তার মধ্যে ৪ লক্ষ ৯৩ হাজার ১৪৫ জন রোগী সুস্থও হয়েছেন। রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৪৩ জনের।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)