Coronavirus Lockdown

পরীক্ষার নির্দেশ মানতেই হবে, দাবি ইউজিসির

জুলাইয়ের ৬ তারিখে ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নির্দেশ দেয়, করোনা সংক্রমণ ও লকডাউন সত্ত্বেও ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ডিগ্রির চূড়ান্ত বর্ষ এবং শেষ সিমেস্টারের পরীক্ষা নিতেই হবে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২০ ০৫:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

তাদের নির্দেশ সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ফাইনাল ইয়ার বা শেষ সিমেস্টারের পরীক্ষা না-নিলে সেটি নিয়মভঙ্গ হবে বলে সুপ্রিম কোর্টে জানাল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ইউজিসি-র হয়ে সওয়াল করে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, কোনও রাজ্য কখনও একতরফা ভাবে কেন্দ্রীয় নিয়ামক সংস্থা (এ ক্ষেত্রে ইউজিসি)-র নিয়মে পরিবর্তন করতে পারে না।

Advertisement

জুলাইয়ের ৬ তারিখে ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নির্দেশ দেয়, করোনা সংক্রমণ ও লকডাউন সত্ত্বেও ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ডিগ্রির চূড়ান্ত বর্ষ এবং শেষ সিমেস্টারের পরীক্ষা নিতেই হবে। পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, দিল্লির মতো কিছু রাজ্য সরকার নির্দেশিকার বিরোধিতা করে জানায়, অতিমারি এবং লকডাউনের মধ্যে কোনও পরীক্ষার ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। এর পরেই দিল্লি এবং মহারাষ্ট্র সরকার সর্বোচ্চ আদালতে বিচার চেয়ে মামলা করে। ৩৬ জন পড়ুয়াও আদালতের দ্বারস্থ হন। ৩১ জুলাই এই মামলার শুনানির পরে বিচারপতি অশোক ভূষণের বেঞ্চ কোনও নির্দেশ দেননি। এ দিনের শুনানিতে ইউজিসি-র পক্ষে সলিসিটর জেনারেল জানান, পড়ুয়াদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসি লিখিত জবাব দিতে চায়। তার জন্য সময় দেওয়া হোক। বিচারপতি ভূষণ ১৪ অগস্ট পর্যন্ত ইউজিসি-কে সময় দেন।

আবেদনকারীদের আইনজীবীরা ইউজিসি-র ৬ জুলাইয়ের নির্দেশিকাকে শুধু অনৈতিক নয়, অসাংবিধানিক বলেও অভিযোগ করেন। তাঁরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশিকা উল্লেখ করে দেখান, লকডাউনের অঙ্গ হিসেবে সেখানে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়-সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। আনলকডাউন শুরু হওয়ার নির্দেশিকাতেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি না-খোলার কথা বলা হয়েছে। তাঁদের প্রশ্ন— এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষার আয়োজন করার নির্দেশ ইউজিসি কী করে দিতে পারে? পরীক্ষা নিলে তা তো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশিকার লঙ্ঘন হবে।

Advertisement

এ দিন ভিডিয়ো কনফারেন্সে হওয়া শুনানিতে কেন্দ্রীয় সরকার এবং ইউজিসি-র পক্ষে সলিসিটর জেনারেল মেহতা বলেন, পরীক্ষা না-হওয়াটা পড়ুয়াদের পক্ষে ভাল হতে পারে না। ইউজিসি পরামর্শ দিচ্ছে, ছুটির মধ্যে পড়ুয়ারা যেন পড়াশোনা করে পরীক্ষার জন্য তৈরি থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এবং তার দেওয়া ডিগ্রির নিয়ামক সংস্থা ইউজিসি। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারগুলি একতরফা ভাবে ইউজিসি-র নির্দেশিকা লঙ্ঘন করতে পারে না। পরীক্ষা ছাড়া ডিগ্রি দিলে সেই ডিগ্রির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, পড়ুয়ারাই তখন বিপাকে পড়বেন। মেহতা জানান, দেশে প্রায় ৮০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২০৯টি ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা নিয়ে নিয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরীক্ষার বন্দোবস্ত করছে আরও ৩৯০টি বিশ্ববিদ্যালয়। কাজেই লকডাউনের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া যায় না, এই যুক্তি ধোপে টেকে না।

ওর আগে ইউজিসি সর্বোচ্চ আদালতে জানিয়েছিল, পড়ুয়ারা যেন ভেবে না-বসেন যে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারের জন্য গিয়েছে মানেই আর তাঁদের পরীক্ষা দিতে হবে না। পড়ুয়াদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করেই ইউজিসি-র বিশেষজ্ঞ কমিটি চূড়ান্ত বর্ষ ও শেষ সিমেস্টারে পরীক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। কাগজে-কলমে প্রথাগত পরীক্ষার বন্দোবস্ত না-করা গেলে তার সঙ্গে অনলাইন মূল্যায়ন মিলিয়ে, বা সম্পূর্ণ অনলাইনে মূল্যায়ন করে তার ভিত্তিতে ডিগ্রি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তাদের ৬ জুলাইয়ের নির্দেশিকায়। অনেকেই তা মেনে নিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন