Coronavirus

বিমানে মাঝের আসনে যাত্রী কেন? সুপ্রিম কোর্টে তিরস্কৃত কেন্দ্র

গত ২৩ মার্চ অসামরিক বিমান পরিবহণ দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজিসিএ)-এর তরফে যে সার্কুলার জারি করা হয়েছিল, তাতে মাঝের আসনটি ফাঁকা রাখার কথা বলা হয়েছিল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২০ ১৫:১৯
Share:

বিমানে মাঝের আসনে যাত্রী বসানোয় প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র। —ফাইল চিত্র।

প্রবাসীদের দেশে ফেরানোর সময় বিমানে মাঝের আসনটি ফাঁকা রাখা না নিয়ে এ বার সুপ্রিম কোর্টে তিরস্কৃত হল কেন্দ্রীয় সরকার। নোভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ রুখতে চারিদিকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে, তখন বিমানে এই নিয়ম মানা হচ্ছে না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল শীর্ষ আদালত। কেন্দ্রকে ১০ দিন সময় দিয়েছে তারা, এর মধ্যে নির্দেশিকা জারি করে কেন্দ্রকে এই নিয়ম বদলাতে হবে।

Advertisement

গত ২৩ মার্চ অসামরিক বিমান পরিবহণ দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজিসিএ)-এর তরফে যে সার্কুলার জারি করা হয়েছিল, তাতে মাঝের আসনটি ফাঁকা রাখার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ‘বন্দে ভারত মিশন’-এর আওতায় ৭ মে থেকে করোনা প্রকোপে বিপর্যস্ত দেশগুলি থেকে প্রবাসীদের ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হলেও, এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ এই নিয়ম মানছেন না বলে সম্প্রতি বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন দেবেন যোগেশ কাননী নামের এয়ার ইন্ডিয়ারই এক পাইলট।

দেবেন যোগেশের সেই আবেদন খতিয়ে দেখে বম্বে হাইকোর্ট অন্তর্বর্তিকালীন নির্দেশে মাঝের আসনের বুকিং বন্ধ করতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টির শুনানি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে এয়ার ইন্ডিয়া এবং কেন্দ্রীয় সরকার। সেই মতো সোমবার সকালে শুনানি শুরু হয় সুপ্রিম কোর্টে। সেখানেই তিরষ্কৃত হন সরকার পক্ষের হয়ে সওয়াল করতে আসা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। আদালতে মেহতা বলেন, সংক্রমণ রুখতে আসনের মধ্যে ব্যবধান না রেখে করোনা পরীক্ষা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলেই চলবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: উপত্যকায় মৃত্যু দুই আইএস জঙ্গির, উদ্ধার প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র

তাঁর এই যুক্তি খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি এসএ বোবডে। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ বোধ বুদ্ধি বলে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। বিমানের বাইরে যেখানে ছ’ফুটের দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে, সেখানে বিমানের ভিতরে তা হবে না কেন?’’ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করেই মাঝের আসন বুকিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তুষার মেহতা। তাতে বিরক্ত হন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘‘এতে যে যাত্রীদের ক্ষতি হবে না, তা কী ভাবে বলছেন আপনি? ভাইরাস কি বোঝে যে বিমানে কাউকে সংক্রমিত করা উচিত নয়? পাশাপাশি বসলে সংক্রমণ তো ছড়াবেই।’’

কেন্দ্রীয় সরকার এবং এয়ার ইন্ডিয়া, দু’পক্ষের হয়েই কেন লড়ছেন সলিসিটর জেনারেল, তা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। জবাবে তুষার মেহতা জানান, এয়ার ইন্ডিয়া এবং কেন্দ্রীয় সরকার একটিই পক্ষ। তাতে আরও চটে যান প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘‘দু’টো কখনও একটি পক্ষ নয়।’’ বিমান সংস্থার জন্য চিন্তা না করে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সম্পর্কে কেন্দ্রের আরও সচেতন হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আরও পড়ুন: ‘বেল্ট খুলে পেটাতে পারি’, ছত্তীসগঢ়ের কোয়রান্টিন সেন্টারে গর্জন বিজেপি মন্ত্রীর​

আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়, আগামী ১৬ জুন পর্যন্ত সমস্ত বুকিং হয়ে গিয়েছে। তাতে আদালত জানায়, আপাতত মাঝের আসনে যাত্রী উঠছে উঠুক। কিন্তু ১৬ জুনের পর মাঝের আসনে বুকিং নেওয়া যাবে না। কাউকে মাঝের আসনটিতে বসিয়ে আনা যাবে না। মামলার শুনানি চলাকালীন কেন্দ্রীয় সরকার আগের সিদ্ধান্ত বদলাতে পারে এবং নয়া নির্দেশিকা জারি করতে পারে বলেও জানিয়ে দেয় আদালত। এ ব্যাপারে আগামী ২ জুন বম্বে হাইকোর্টকে চূড়ান্ত দিতে হবে বলে নির্দেশ দেয়।

শুধুমাত্র প্রবাসী ভারতীদের ফেরানো নিয়েই এ দিন এমন মন্তব্য করেছে শীর্ষ আদালত। আজ থেকে অন্তর্দেশীয় বিমান পরিষেবা চালু হচ্ছে। সে ক্ষেত্রেও এই নিয়ম কার্যকর হবে কি না, সে নিয়ে কিছু জানা যায়নি। অন্তর্দেশীয় বিমানের ক্ষেত্রে মাঝের আসনটি ফাঁকা রাখা যায় কি না, গত সপ্তাহে তা জানতে চাওয়া হয়েছিল অসামরিক পরিবহণ মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরির কাছে। কিন্তু সেই সম্ভাবনা খারিজ করে দেন তিনি। জানিয়ে দেন, এতে বিমানের টিকিটের দাম একধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যেতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন