coronavirus

করোনা পর্বে দেশে এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু, দৈনিক আক্রান্ত বেড়ে ২ লক্ষ ৩৪ হাজার

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৩৪১ জনের। গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বর মারা গিয়েছিলেন ১ হাজার ২৯০ জন। যা এতদিন সর্বোচ্চ ছিল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২১ ০৯:৫৮
Share:

দেশের কোভিড পরিসংখ্যান। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

গত তিন ধরেই দেশের দৈনিক করোনা সংক্রমণ দু’লক্ষ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এবং রোজই তা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২ লক্ষ ৩৪ হাজার ৬৯২ জন। যা শুক্রবারের তুলনায় প্রায় ১৭ হাজার বেশি। সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশে দৈনিক মৃত্যুও লাফিয়ে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৩৪১ জনের। একদিনে মৃত্যুর নিরিখে যা গোটা করোনা পর্বে সর্বোচ্চ। গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বর মারা গিয়েছিলেন ১ হাজার ২৯০ জন। এই সংখ্যা এতদিন সর্বোচ্চ ছিল। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শনিবার ছাপিয়ে দিল সেই সংখ্যাকে।

Advertisement

করোনাভাইরাস দেশে এখনও অবধি প্রাণ কেড়েছে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার ৬৪৯ জনের। কিন্তু গত দু’সপ্তাহে দৈনিক মৃত্যুর লাফিয়ে বৃদ্ধি নতুন করে চিন্তার জায়গা তৈরি করছে। মার্চের মাঝামাঝি সময়েও দেশে দৈনিক মৃত্যু হচ্ছিল ১০০ থেকে ২০০-র মধ্যে। এপ্রিলের প্রথম দু’দিনও তা ছিল ৫০০-র কম। শনিবার সেই সংখ্যা ১৩০০ ছাড়িয়ে গেল।

দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধির জেরে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টাতে দেশে সক্রিয় রোগী বেড়েছে এক লক্ষেরও বেশি। এই মুহূর্তে দেশে সক্রিয় রোগী রয়েছেন ১৬ লক্ষ ৭৯ হাজার ৭৪০ জন। এই সংখ্যক করোনা রোগী এ আগে কখনও ছিল না দেশে। এই সংক্রমণ বৃদ্ধির জেরে হাসপাতালগুলিতে শয্যার অভাব দেখা যাচ্ছে। দিল্লির হাসপাতালে এক শয্যায় দু’জন করে শুয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। চেয়ারে বসে চিকিৎসা পরিষেবা নিচ্ছেন— এই দৃশ্যের দেখা মিলেছে বিভিন্ন জায়গায়। পাশাপাশি মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায়, দেহ সৎকার নিয়ে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। ছত্তীসগঢ়, দিল্লির বিভিন্ন হাসপাতালে মর্গের বাইরে কোভিড মৃতের দেহের স্তুপ দেখা মিলেছে। শ্মশানে গণচিতার ভাইরাল ছবি-ভিডিয়ো বুঝিয়ে দিচ্ছে দেশের করোনা পরিস্থিতি কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে।

Advertisement

মহারাষ্ট্র ছাড়াও দেশের বেশ কয়েক জায়গায় দৈনিক সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। তাঁদের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে উত্তরপ্রদেশে, দিল্লি, ছত্তীসগঢ়, কর্নাটক, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, হরিয়ানা, পঞ্জাব। এই রাজ্যেগুলিতে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, করোনার প্রথম পর্বেও তা হয়নি। মহারাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩ হাজার ৭২৯ জন। একদিনে আক্রান্তের নিরিখে যা এখনও অবধি সর্বোচ্চ। একই রেকর্ড শনিবার হয়েছে দিল্লিতেও। শনিবার হওয়া ১৯ হাজার ৪৮৬ জন আক্রান্ত এখনও অবধি সর্বোচ্চ রাজধানীতে। উত্তরপ্রদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ২৭ হাজার ৩৬০ জন। ছত্তীসগঢ়ে অবশ্য গত ২-৩ দিন ধরেই দৈনিক আক্রান্ত ১৫ হাজারের আশপাশে রয়েছে। কর্নাটকে দৈনিক আক্রান্ত ১৪ হাজার ৮৫৯ জন। কেরলেও তা বেড়ে ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। মধ্যপ্রদেশে আক্রান্ত শনিবার ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। গুজরাতে তা প্রায় ৯ হাজার। তামিলনাড়ুতেও ভোটের পর থেকে আক্রান্ত বেড়ে সাড়ে ৮ হাজারে পৌঁছেছে। রাজস্থান, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, হরিয়ানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, পঞ্জাবে আক্রান্ত রোজ বেড়ে চলেছে।

দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় দেশের কোভিড পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এই সংক্রমণ শৃঙ্খল ভাঙার চেষ্টা করছে বিভিন্ন রাজ্যের সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। সে জন্য ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্যে জারি হয়েছে ‘করোনা কার্ফু’। এই কার্ফু জারির উদ্দেশ্য একটাই, জনতার জমায়েত কমিয়ে সংক্রমণ শৃঙ্খল ভাঙা এবং লকডাউনের কড়াকড়ি ফিরিয়ে আনা। রাত্রিকালীন কার্ফুও জারি হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের একাধিক এলাকায়। সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের জেরে সারা উত্তরপ্রদেশে রবিবার লকডাউন চলবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন