coronavirus

‘করোনা-ক্ষত রাজ্যের ভাঁড়ারে’

শুধু মানুষের শরীরে নয়। করোনাভাইরাস রাজ্যগুলির আর্থিক স্বাস্থ্যেও দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত রেখে যাবে বলে আজ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২০ ০৩:৫১
Share:

ছবি সংগৃহীত।

রাজ্যগুলির রাজকোষে টান পড়বে। ধার করতে গিয়ে দেনার বোঝা চাপবে। ফলে ভবিষ্যতে আমজনতার উপরে করের বোঝা চাপাতে হবে। সড়ক-সেতুর মতো পরিকাঠামো তৈরির খরচে কাটছাঁট করতে হবে। ফলে আর্থিক বৃদ্ধিতে তার ধাক্কা লাগবে। আর্থিক বৃদ্ধি কমলে ফের রাজ্যগুলির আয় কমবে। টান পড়বে রাজকোষে।
শুধু মানুষের শরীরে নয়। করোনাভাইরাস রাজ্যগুলির আর্থিক স্বাস্থ্যেও দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত রেখে যাবে বলে আজ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আশঙ্কা, কোভিডের মোকাবিলায় এক দিকে বাড়তি খরচ, অন্য দিকে লকডাউনের জেরে রাজস্ব আয় কমে যাওয়ায় রাজ্যগুলির রাজকোষ ঘাটতি ৪ শতাংশ ছাপিয়ে যেতে পারে। ফলে রাজ্য সরকারগুলিকে লগ্নিতে রাশ টানতে হবে। ভবিষ্যতে আয় বাড়াতে আরও বেশি করে কর চাপাতে হবে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আজ রাজ্যগুলির চলতি অর্থ বছরের বাজেটের পর্যালোচনা করে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাদের অনুমান, কোভিডের আগে রাজ্যগুলির সামগ্রিক রাজকোষ ঘাটতির হার ২.৮ শতাংশ হলেও কোভিড পরবর্তী সময়ে তা ৪.৬ শতাংশে পৌঁছতে পারে। কোভিডের ফলে জিডিপি-র সঙ্কোচন হবে। তার থেকেও বেশি হারে রাজস্ব আয় কমবে। শুধু চলতি অর্থবর্ষে নয়, কয়েক বছর ধরেই এই হাল বজায় থাকবে। আর্থিক বৃদ্ধির হার এক দুষ্টচক্রের মধ্যে পড়ে যাবে। দেনার বোঝা সামলাতে পরিকাঠামোয় খরচ ছাঁটতে হবে। তার জেরে বৃদ্ধি কমবে।
করোনা অতিমারির আগেই গত অর্থ বছর, ২০১৯-২০-তে অর্থনীতির ঝিমুনি চলছিল। রাজস্ব আয় কম হয়েছিল। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বক্তব্য, চলতি বছরে তাই রাজস্ব আয় অনেকখানি বাড়বে বলে রাজ্যগুলি বাজেটে আশা করেছিল। করোনা সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে। জিএসটি থেকে রাজ্যগুলির আয় কমেছে। কেন্দ্রেরও কর আদায় কমবে। তার ভাগ হিসেবে রাজ্যের পাওনাও কমবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বক্তব্য, গত তিন বছর ধরে রাজকোষ ঘাটতি ধাপে ধাপে কমিয়ে আনার যে চেষ্টা হয়েছিল, কোভিডের ফলে তার সবটাই মাঠে মারা গেল।
এখানেই কেন্দ্র ও রাজ্য স্তরে আর্থিক নীতির প্রয়োজন বলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যগুলি কোথায় খরচ করছে, খরচ ছাঁটছে, তা দেখতে হবে। বাজেটের বিশ্বাসযোগ্যতাও বজায় রাখতে হবে। যে সমস্ত প্রকল্পে খরচ করলে আর্থিক বৃদ্ধি বাড়বে, অগ্রাধিকার দিতে হবে সেখানেই। যে সব রাজ্যের আর্থিক সঙ্গতি কম, তাদের কম লগ্নিতে বেশি কর্মসংস্থান হয়, এমন প্রকল্পে নজর দিতে হবে। ডিজিটাল কর আদায় ব্যবস্থা চালু করে কর ফাঁকি রুখতে হবে। যাতে বাড়তি কর না-চাপিয়েও রাজস্ব আদায় বাড়ানো যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন