সপ্তাহ দুয়েকের ব্যবধান। ফের পরিবারের মর্যাদা রক্ষার নামে খুন উত্তরপ্রদেশে।
বিধর্মীকে বিয়ে করার ‘অপরাধে’ মেয়ে-জামাইকে নৃশংস ভাবে খুন করল বাড়ির লোকজনই। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে গাজিয়াবাদ লাগোয়া একটি গ্রামে। নিহত তরুণীর মা-ভাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত গত সেপ্টেম্বরে। বাড়ির অমতে প্রতিবেশী যুবক সোনু কুমারকে আইনি ভাবে বিয়ে করেন বছর কুড়ির তরুণী দানিস্তা। ভিন্ন ধর্মে বিয়ে করায় তখন থেকেই দানিস্তাকে সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল তাঁর পরিবার। ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছিল সোনুকেও। পারিবারিক সমস্যা শেষমেশ পঞ্চায়েত অবধি গড়ায়। শুক্রবার রাতে নবদম্পতিকে বিয়ে ভাঙার নিদান দেয় ফতেপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। পঞ্চায়েতের নির্দেশ উপেক্ষা করে গ্রাম ছেড়ে পালান সোনু-দানিস্তা। কিন্তু শনিবার সকালেই ফিরে আসেন তাঁরা। যদিও কেন ফিরে এলেন, স্পষ্ট ভাবে জানা যায়নি তা। আর সেই ফিরে আসাই কাল হল।
সোনুকে গ্রামে ঢুকতে দেখেই তাঁর উপর চড়াও হয় দানিস্তার বড় ভাই তালিব। রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। সোনুর চিৎকারে তাঁকে বাঁচাতে ছুটে আসেন দানিস্তা। ঘটনাস্থলে তখন সোনুর ভাই সঞ্জীবও ছিলেন। তাঁর চোখের সামনেই দানিস্তার চুলের মুঠি ধরে, ছুরি দিয়ে গলা কেটে দেয় তালিব। খানিক পরে সেখানে পৌঁছয় দানিস্তার মা। সোনুকেও গলা কেটে মেরে ফেলার নির্দেশ দেয় মহিলা। ছটপট করতে করতে নিমেষে নিথর হয়ে যায় রক্তাক্ত দেহ দু’টি। শনিবার রাতে দানিস্তার মা এবং বড় ভাই তালিবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দানিস্তার আরও দুই ভাই-সহ আরও ছ’জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। সংঘর্ষ, খুন এবং তপশিলি আইনে মামলা দায়ের হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।
মাত্র চোদ্দো দিন আগেই দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে খুনের অভিযোগ ওঠে তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে। দিল্লির দ্বারকার বাসিন্দা ওই তরুণী বাড়ির অমতে ভিন্ন জাতে বিয়ে করেছিলেন। সম্মান রক্ষার নামে বিয়ের তিন দিনের মাথায় মেয়েকে খুন করে গোপনে শেষকৃত্য সেরে ফেলেছিলেন বাবা-মা। ঘটনার চার দিনের মাথায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ।