Covid

দেশে রোগী কমলেও মৃত্যু বাড়ছে দিল্লিতে

গত ১২ দিনের মধ্যে এই নিয়ে ছ’বার দিল্লিতে দৈনিক কোভিডে মৃতের সংখ্যা ১০০ পেরিয়ে গেল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৪১
Share:

ছবি রয়টার্স।

সারা দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আবার চল্লিশ হাজারের নীচে নামল। গত কাল থেকে সংক্রমণ ধরা পড়েছে ৩৭,৯৭৫ জনের। সব চেয়ে বেশি রোগী দিল্লিতে— ৪৪৫৪ জন। তার পরেই মহারাষ্ট্র, ৪১৫৩ জন। সার্বিক ভাবে আগের দিনের চেয়ে ১৩ শতাংশ সংক্রমণ কমেছে বলে কেন্ত্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মৃত্যু হয়েছে ৪৮০ জন কোভিড রোগীর। রয়েছেন দিল্লির ১২১ জন।

Advertisement

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বক্তব্য, গত ১৪ দিন ধরে দেশে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ৫ লক্ষের নীচে রয়েছে। মোট সংক্রমিতের মাত্র ৪.৭৮ শতাংশ এখন অসুস্থ। সুস্থতার হার ৯৩.৭৬ শতাংশ, মৃত্যুহার ১.৪৬ শতাংশ। তাৎপর্যপূর্ণ হল, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যওয়াড়ি মৃতের সংখ্যায় দিল্লির পরেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ (৪৭)।

দুশ্চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু যদিও দিল্লিই। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল প্রধানমন্ত্রীকে আজকের বৈঠকে জানিয়েছেন, রাজধানীতে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ লাগামছাড়া হওয়ার নেপথ্যে দূষণেরও ভূমিকা রয়েছে। গত ১২ দিনের মধ্যে এই নিয়ে ছ’বার দিল্লিতে দৈনিক কোভিডে মৃতের সংখ্যা ১০০ পেরিয়ে গেল।

Advertisement

আরও পড়ুন: তিন দশকে প্রথম, বয়কটের ডাক ছাড়াই ভোট কাশ্মীরে

এ ভাবে মৃত্যু বেড়ে চলায় রাজধানীর গোরস্থানের জমিতে টান পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় কোভিডে মৃত ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের শেষকৃত্য হচ্ছে আইটিও-র কাছে সব চেয়ে বড় গোরস্থানটিতে। সেখানকার এক পদাধিকারী জানিয়েছেন, দিনে অন্তত ৪-৫ জন কোভিড রোগীর দেহ আসছে। এমন চললে আগামী দু’মাসে জমির টানাটানি শুরু হতে পারে।

রাজধানীতে এখন প্রতি ১০০ জনের কোভিড পরীক্ষা হলে প্রায় ১২ জনের কোভিড ধরা পড়ছে। অথচ সারা দেশে এই সংক্রমণের হার এখন ৩.৫ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া আজ বলেছেন, ‘‘অদূর ভবিষ্যতে স্কুল খোলার কোনও সম্ভাবনা নেই। কোনও বাবা-মা সন্তানের স্বাস্থ্য নিয়ে ঝুঁকি নিতে চাইবেন না।’’ এ দিকে, গুজরাতে গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৪৮৭ জন। আমদাবাদে সপ্তাহান্তের কার্ফু শেষ হলেও নৈশ কার্ফু ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রক আগেই জানিয়েছে, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, পুরকর্মী, পঞ্চাশোর্ধ্ব প্রবীণ, কোমর্বিডিটির সমস্যায় ভোগা প্রবীণ-সহ ৩০ কোটি মানুষকে প্রথম পর্যায়ে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। চিকিৎসক, নার্স, ডাক্তারি পড়ুয়া, আশা কর্মী মিলিয়ে প্রায় এক কোটি স্বাস্থ্যকর্মীকে চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে। এক সপ্তাহের মধ্যে এই প্রক্রিয়া যাতে সেরে ফেলা যায়, তা দেখার পাশাপাশি এই বিপুল সংখ্যক স্বাস্থ্যকর্মীর টিকাকরণের পরিকাঠামো গড়তেও বলা হয়েছে।

কিন্তু টিকায় কাজ হবে কত দিন? এমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়ার মতে, করোনাভাইরাসকে ঠেকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে ন’মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সক্রিয় হতে পারে কোভিডের টিকা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কোভিড অতিমারি খুব দ্রুত শেষ হয়ে যাবে, এটা ভাবা ঠিক নয়। আরও কিছু দিন থাকবে এই ভাইরাসের প্রভাব।’’

আরও পড়ুন: নিভার নিয়ে সতর্কতা তামিলনাড়ু, পুদুচেরিতে

তবে ২০২৩ সালের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) অতিমারির সমাপ্তি ঘোষণা করতে পারে বলে আশাবাদী গুলেরিয়া। তাঁর মতে, কোভিডের টিকা সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে সাহায্য করবে। জনগোষ্ঠীর মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও গড়ে তুলবে। ক্রমশ অতিমারির মতো ভয়াবহ আকার ছেড়ে হয়তো সাধারণ রোগে পরিণত হবে কোভিড-১৯।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন