COVID-19 Vaccine

‘অঙ্কের ধাপগুলোই শেষ করিনি, পৌঁছে যাচ্ছি ফলে’

বিজ্ঞানী মহলের একাংশের বক্তব্য, বিশ্বে এই মুহূর্তে যে ১৭০টির মতো ভ্যাকসিনের ‘ট্রায়াল’ চলছে, তার মধ্যে ২৬টি ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের পরীক্ষা ‘হিউম্যান ট্রায়াল’ পর্যন্ত পৌঁছেছে।

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:৩৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

তাড়াহুড়োই কাল হচ্ছে না তো? অক্সফোর্ডের তৈরি কোভিড ১৯ ভ্যাকসিনের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যাওয়ার পরে ফের এই পুরনো প্রশ্নই সামনে আসছে। ভ্যাকসিন তৈরির যে প্রতিযোগিতা চলছে বিভিন্ন রাষ্ট্র এবং ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির মধ্যে, আদতে তা কতটা সুরক্ষিত? সব নিয়ম সেখানে ঠিকঠাক মেনে চলা হচ্ছে তো? নাকি একটি ধাপ বাদ দিয়েই অপর ধাপে চলে যাওয়া হচ্ছে?

Advertisement

বিজ্ঞানী মহলের একাংশের বক্তব্য, বিশ্বে এই মুহূর্তে যে ১৭০টির মতো ভ্যাকসিনের ‘ট্রায়াল’ চলছে, তার মধ্যে ২৬টি ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের পরীক্ষা ‘হিউম্যান ট্রায়াল’ পর্যন্ত পৌঁছেছে। যার মধ্যে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন রয়েছে একদম প্রথম সারিতে। ফলে গবেষকেরা জানাচ্ছেন, সেই ভ্যাকসিনের পরীক্ষাই যদি সুরক্ষার কারণে স্থগিত রাখতে হয়, তা হলে অন্যগুলির ক্ষেত্রেও যে একই ঘট‌না ঘটবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে যুক্ত এক গবেষকের কথায়, ‘‘প্রথম থেকেই বলা হয়েছে যে ভ্যাকসিন তৈরি নিয়ে যে প্রতিযোগিতা চলছে, তা কাম্য নয়। কারণ তাতে সুরক্ষার দিকটা কম্প্রোমাইজড হওয়ার আশঙ্কা থাকে।’’

নিয়ম মতো তিনটি ধাপে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল হওয়ার কথা— ক্লিনিক্যাল ফেজ় ওয়ান, টু এবং থ্রি।

Advertisement

আরও পড়ুন: বেজিংকে বার্তা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর, বায়ুসেনায় রাফালের যোগ, চুপ প্রধানমন্ত্রী​

আরও পড়ুন: মস্কোয় দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ।। আগে সেনা সরাক চিন: জয়শঙ্কর

এখন জরুরি পরিস্থিতিতে ফেজ় টু এবং থ্রি একসঙ্গে করে পরীক্ষা করা যেতে পারে, যা এখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই করা হচ্ছে। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও সুরক্ষাকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীদের একাংশ। নিউ ইয়র্কের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি ও ইমিউনোলজি বিভাগের অধ্যাপক আভেরি অগস্টের কথায়, ‘‘জরুরি সময়ে পরীক্ষার ধাপগুলি আলাদা-আলাদা ভাবে করার সময় হাতে না-ই থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে তা প্রয়োজনমতো একত্রে করা যেতে পারে। কিন্তু সেখানেও ‘হায়েস্ট সেফটি স্ট্যান্ডার্ড’ অনুসরণ করাটা বাধ্যতামূলক।’’

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, যেখানে ভাইরাসটাকেই এখনও পুরোপুরি বুঝে ওঠা যায়নি, সেখানে এত তাড়াতাড়ি ভ্যাকসিন বাজারে চলে আসা বা তার পরীক্ষা সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়াটাও বেশ আশ্চর্যজনক! কোনও ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা (এফিকেসি) বোঝাটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, কিন্তু সুরক্ষার বিষয়ে সমঝোতা করাটা শুধু বিপজ্জনকই নয়, অনৈতিকও বটে। ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশনাল র‌্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক’ অনুযায়ী সারা দেশের মেডিক্যাল কলেজগুলির মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে থাকা চণ্ডীগড়ের ‘পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ’-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর যোগেশ চাওলা বলেন, ‘‘ব্যাপারটা অনেকটা এ রকম হচ্ছে যে, অঙ্কের ধাপগুলোই শেষ করিনি, পৌঁছে যাচ্ছি ফলে। আমরা ভাইরাসটার চরিত্র ঠিক করে বুঝে উঠতে পারলাম না, কত দিন অ্যান্টিবডি শরীরে থাকে তা জানতে পারলাম না, তার আগেই ভ্যাকসিনের পরীক্ষা সম্পূর্ণ হয়ে গেল বলা হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে! বিষয়টা ভীষণই উদ্বেগের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন