দিল্লির অশোক রোডে বিজেপির সদর দফতর পর্যন্ত মিছিল করেছেন সিপিএম। ইয়েচুরি, প্রকাশ, বৃন্দা, এস আর পিল্লাই, বি ভি রাঘভুলুর মতো পলিটব্যুরো নেতারা।—নিজস্ব চিত্র।
গত এক সপ্তাহ ধরেই দিল্লিতে সিপিএমের সদর দফতর, এ কে গোপালন ভবনের বাইরে পুলিশের তৈরি লোহার ব্যারিকেড। সীতারাম ইয়েচুরির জন্য বাড়তি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত হয়েছে। তাঁর সঙ্গে ঘুরছেন দিল্লি পুলিশের রাইফেলধারী জওয়ান। বিজেপির শীর্ষনেতা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা নিত্যদিন সিপিএমের অফিসের সামনে এসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
হঠাৎই ফের কমরেডরা জাতীয় রাজনীতিতে প্রচারের কেন্দ্রবিন্দুতে। হঠাৎ মিলে যাওয়া এই অক্সিজেনে ভর করেই আজ দিল্লির রাস্তায় নেমেছেন সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাট, বৃন্দা কারাট, এস আর পিল্লাইরা। অনেক দিন পরে একসঙ্গে।
কেরলে আরএসএস-বিজেপির বিরুদ্ধে হিংসার অভিযোগ তুলে গত সপ্তাহ থেকেই দিল্লিতে সিপিএমের সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিজেপি। নেতা-মন্ত্রীরা হাজির থাকছেন সেখানে। কেরলেও ৩ অক্টোবর থেকে ‘জন সুরক্ষা যাত্রা’ করছে বিজেপি।
এরই পাল্টা আজ দিল্লির অশোক রোডে বিজেপির সদর দফতর পর্যন্ত মিছিল করেছেন সিপিএম। ইয়েচুরি, প্রকাশ, বৃন্দা, এস আর পিল্লাই, বি ভি রাঘভুলুর মতো পলিটব্যুরো নেতারা মিছিল থেকে স্লোগান তুলেছেন, ‘বিজেপি-আরএসএস মিথ্যে প্রচার বন্ধ করো!’ ইয়েচুরি বলেন, ‘‘বিজেপি-আরএসএস কেরলে সিপিএমকে নিশানা করছে। আরএসএসের হামলায় ২০০ জন সিপিএম কর্মী নিহত হয়েছেন। এখন তারাই সিপিএমের বিরুদ্ধে আক্রমণের অভিযোগ তুলছে। এ তো— উল্টা চোর কোতোয়ালকো ডাঁটে!’’ গোটা দেশেই আজ সিপিএমের মিছিল হয়েছে।
সিপিএম যখন বিজেপির দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, একই সময়ে সিপিএমের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিজেপি নেতারা। নেতৃত্বে ছিলেন দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি কে সিংহ ও কিরেণ রিজিজু। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রিজিজুর অভিযোগ, ‘‘কেরলের সিপিএম সরকার খুনে মদত দিচ্ছে। আমরা ওদের মুখোশ খুলে দেব।’’
উল্টো দিকে বিজেপির দফতরের সামনে বিক্ষোভে প্রকাশ কারাট বলেন, ‘‘বিজেপি-আরএসএস মিথ্যে প্রচার চালাচ্ছে।’’ ইয়েচুরির দাবি, পুরোটাই আসলে অর্থনীতিতে মোদী সরকারের ব্যর্থতা থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতে। এ দিকে, রবিবারও মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের জেলা কান্নুরে সিপিএমের মিছিলে বোমার আঘাতে পাঁচ জন সিপিএম কর্মী, পাঁচ জন পুলিশ-কর্মী আহত হয়েছেন। ওই ঘটনায় কয়েক জন বিজেপি-আরএসএস কর্মীকে আটক করা হয়েছে। কেরলে বিজেপি-আরএসএসের এই সংঘাতে সিপিএম অক্সিজেন পেলেও এর অন্য তাৎপর্য দেখছেন দলের নেতারা। সেটা হল— দলের মধ্যে পিনারাই বিজয়নের দাপট ক্রমশ বাড়ছে। আগামী বছর পার্টি কংগ্রেসেও তার প্রভাব পড়বে বলে গুঞ্জন সিপিএমে।