রাজ্যসভায় ইয়েচুরিকে ফের চায় বঙ্গ সিপিএম

বিধানসভা ভোটের পরে দলের পলিটব্যুরোর নিদানে কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী বোঝাপড়া বন্ধ। কিন্তু রাহুল গাঁধীর দলের সঙ্গে অন্য রকম নির্বাচনী বোঝাপড়াই চাইছে সিপিএমের বঙ্গ ব্রিগেড! তাদের লক্ষ্য, ফের সীতারাম ইয়েচুরিকে রাজ্যসভায় পাঠানো।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৭ ০৩:৫৫
Share:

সীতারাম ইয়েচুরি

বিধানসভা ভোটের পরে দলের পলিটব্যুরোর নিদানে কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী বোঝাপড়া বন্ধ। কিন্তু রাহুল গাঁধীর দলের সঙ্গে অন্য রকম নির্বাচনী বোঝাপড়াই চাইছে সিপিএমের বঙ্গ ব্রিগেড! তাদের লক্ষ্য, ফের সীতারাম ইয়েচুরিকে রাজ্যসভায় পাঠানো।

Advertisement

আগামী জুলাইয়ে কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্যের সঙ্গেই ইয়েচুরির রাজ্যসভায় মেয়াদ শেষ হবে। মোট যে ৬টি আসনে নির্বাচন হবে, রাজ্য বিধানসভায় এখনকার শক্তি অনুযায়ী বামেদের একার পক্ষে কাউকে রাজ্যসভায় পাঠানো সম্ভব নয়। বিরোধীরা একটিই আসন পেতে পারে। প্রধান বিরোধী দল হিসাবে কংগ্রেস সেই আসনের প্রথম দাবিদার, ভোটের শক্তিতেও তারা এগিয়ে। কিন্তু সিপিএমের বাংলার নেতাদের বড় অংশ চাইছেন, কংগ্রেস এ বার ইয়েচুরির জন্য আসনটি ছেড়ে দিক। পরের বছর যে ৫টি আসন শূন্য হবে বাংলা থেকে, সেখানে কংগ্রেসের কাউকে পাঠানো হোক। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং কংগ্রেসের হাইকম্যান্ডের সঙ্গে দৌত্য করার লক্ষ্যে সিপিএমের রাজ্য কমিটির দু-চার জন নেতা দিল্লি যাচ্ছেন। সংসদের অধিবেশনের ফাঁকে তাঁরা ঘরোয়া আলোচনা এগিয়ে নিতে চান।

তবে ইচ্ছা হলেও বঙ্গ সিপিএমের সামনে বাধা অনেক। প্রথমত, কংগ্রেসের ভোট নিয়ে দলের কাউকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত করতে পলিটব্যুরোয় প্রকাশ কারাটপন্থীরা আদৌ কি রাজি হবেন? দ্বিতীয়ত, সিপিএম সচরাচর কাউকে দু’বারের বেশি রাজ্যসভায় পাঠায় না। ইয়েচুরির জন্য ব্যতিক্রম করা যাবে কী ভাবে? তৃতীয়ত, এর আগে বৃন্দা কারাটকে কেরল বা ত্রিপুরা থেকে জিতিয়ে আনার চেষ্টা দলের অন্দরের বাধাতেই আটকে গিয়েছে। এখন ইয়েচুরির জন্য বাংলা একই রকম চেষ্টা করলে কেরল ব্রিগেডই আপত্তি তুলবে বেশি। এবং চতুর্থত, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরে সাংসদ পদ ছেড়ে দেওয়ার দাবি দলের মধ্যে আগে থেকেই আছে। সেখানে মেয়াদ ফুরনোর পরে ব্যতিক্রমী পথে ফের সংসদে যাওয়া মোটেই সহজ নয়!

Advertisement

বাংলার নেতাদের বড় অংশ অবশ্য যুক্তি দিচ্ছেন, কয়েক বছরে রাজ্যসভায় ইয়েচুরি প্রায় গোটা বিরোধী শিবিরের নেতার দায়িত্বই পালন করছেন। জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে ইয়েচুরির আলাদা গুরুত্ব আছে। কংগ্রেস এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও তাঁর সমীকরণ ভাল। অন্য কাউকে রাজ্যসভায় পাঠিয়ে তাঁর জায়গা নেওয়া সম্ভব নয়। আর তাতে এই সামান্য কয়েক জন সাংসদ নিয়ে সিপিএম সর্বভারতীয় স্তরে আরও গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘এই মুহূর্তে সংসদে ইয়েচুরির বিকল্প নেই। তবে তৃতীয় বারের জন্য তাঁকে সাংসদ করতে গেলে আরও অনেক পথ পেরোতে হবে!’’

কংগ্রেস সূত্রেও বলা হচ্ছে, বাংলা থেকে একটিমাত্র আসনের জন্য দলের মধ্যে দৌড় শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে সিপিএমের নেতৃত্ব চাইলে কথা বলতে আপত্তি নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন