এনআরসিকে সামনে রেখে কাছাড়ে সক্রিয় সিপিএম

অসমে তরুণ গগৈ সরকারের কট্টর বিরোধী সিপিএম। বিধানসভার ভেতরে তাদের কেউ নেই বটে, তবে বাইরে বিভিন্ন বিষয়ে সব সময়েই সরব তাঁরা। ব্যতিক্রম জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এ বিষয়েও সিপিএমের প্রচুর অভিযোগ। তবু সরকারের যে কাজ করার কথা, কাছাড়ে সিপিএম সেই কাজটাই করে চলেছে। গত দু’দিন ধরে শহরের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে পথসভা। জেলা অফিসে খোলা হয়েছে এনআরসি সহায়তা কেন্দ্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৫ ০৩:৩৬
Share:

অসমে তরুণ গগৈ সরকারের কট্টর বিরোধী সিপিএম। বিধানসভার ভেতরে তাদের কেউ নেই বটে, তবে বাইরে বিভিন্ন বিষয়ে সব সময়েই সরব তাঁরা। ব্যতিক্রম জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এ বিষয়েও সিপিএমের প্রচুর অভিযোগ। তবু সরকারের যে কাজ করার কথা, কাছাড়ে সিপিএম সেই কাজটাই করে চলেছে। গত দু’দিন ধরে শহরের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে পথসভা। জেলা অফিসে খোলা হয়েছে এনআরসি সহায়তা কেন্দ্র।

Advertisement

এনআরসি-র ফর্ম বিলির আগে নাগরিকদের সভা-সমিতির মাধ্যমে সচেতন করে তোলার কথা জেলা প্রশাসনের। পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন এবং দুই-এক দিন শহরে মাইকে করে প্রচার ছাড়া সরকারি তরফে তেমন কিছু করা হয়নি। এরই সুযোগ নিচ্ছে একদল দালাল। এনআরসি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে তারা কাউকে নির্বাচন শাখায় পাঠায় তো কাউকে আদালতে গিয়ে আইনজীবীর পরামর্শ নিতে বলে। মানুষকে জটিলতার মধ্যে ফেলে তারপর সব কাজ করে দেবে বলে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় রয়েছে তারা। গরিব অশিক্ষিতদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাদের নানাভাবে ঠকাতেও তাদের বাধছে না।

সিপিএমের পক্ষ থেকে এই সব অভিযোগ এনে দালালদের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে শিলচর শহরে পথসভা শুরু করেছে সিপিএম। বুধবার থেকে স্থানে স্থানে বক্তৃতা করছেন নেতৃবৃন্দ। কাল তাঁরা পথসভা করেন ঘনিয়ালায়। তপোজ্যোতি ভট্টাচার্য, দুর্গেশ পুরকায়স্থ, সুপ্রিয় ভট্টাচার্য, সমীরণ আচার্য-রা বলেন, এনআরসি নিয়ে ঘাবড়ানোর কোনও কারণ নেই। নির্বাচন শাখায় গিয়ে ভোটার তালিকার প্রত্যায়িত কপির জন্য ঘোরাঘুরিও প্রয়োজন নেই। ১৯৭১ বা ১৯৬৬ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকার ব্যাপারে এনআরসি সেবাকেন্দ্রগুলিতে গিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়। ইন্টারনেটের সুবিধে যেখানে রয়েছে সেখানে গিয়ে নিজেরাও দেখে নিতে পারেন। নাম থাকলে সেবাকেন্দ্র থেকেই মিলছে ‘লিগ্যাসি ডাটা’। ইন্টারনেটে নিজেরাও তা সংগ্রহ করতে পারেন। এই কাজের জন্য সিপিএমের কাছাড় জেলা কমিটির অফিসে যে সহায়তা কেন্দ্র খোলা হয়েছে সেখানেও সাধারণ মানুষকে স্বাগত জানাতে যে তাঁরা তৈরি, তাও জানাচ্ছেন সিপিএম নেতৃত্ব।

Advertisement

সিটুর কাছাড় জেলা সম্পাদক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নিজের বা পূর্বপুরুষদের কারও নাম ভোটার তালিকায় না থাকলেও চিন্তিত হবেন না। আরও কিছু নথি দেখানোর সুযোগ রয়েছে। ভাল করে খুঁজে দেখুন ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের আগের কোনও ধরনের সরকারি নথি মেলে কিনা। সেটুকুও যাঁদের নেই, তাঁদের পাশেও সিপিএম রয়েছে বলে অভয় দেন তিনি। সুপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘কোনও ভারতীয় নাগরিককে এনআরসি থেকে বাদ দিতে তাঁরা দেবেন না। সে জন্য প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’’ তবে তার আগে সবাইকে নিজেদের কাগজপত্র খুঁজে বের করে সার্বিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পরামর্শ দেন তিনি।

সিপিএম নেতারা বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে বাড়ি বাড়ি ফর্ম দেওয়া হবে। ওই ফর্ম পূরণ করে সবাইকে সেবাকেন্দ্রে জমা দিতে হবে। সে কাজে কেউ যেন অবহেলা না করেন। তবে সেবাকেন্দ্র নিয়েও যে প্রচুর সমস্যা রয়েছে, সে সম্পর্কে তাঁরা ক্ষুব্ধ। সিপিএমের অভিযোগ, বহু জায়গায় এখনও সেবাকেন্দ্রই চালু হয়নি। অনেক জায়গায় কম্পিউটার বা প্রিন্টার পৌঁছয়নি। কোথাও আবার সে সব গিয়েছে, কিন্তু ব্যবস্থা নেই বিদ্যুতের। এই সব সমস্যা নিরসনে তাঁরা ইতিমধ্যেই জেলাশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপিও দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন