—ফাইল চিত্র।
আট দিন আগে মুক্তি পেয়েছেন সমঝোতা কাণ্ডে অভিযুক্ত চার জন। এনআইএ-র সেই বিশেষ আদালতের বিচারক জগদীপ সিংহ অবশ্য রায় দিতে গিয়ে জানিয়েছেন, সমঝোতা এক্সপ্রেসে বিস্ফোরণের মতো কাপুরুষোচিত হিংসায় শুধুমাত্র গ্রহণযোগ্য প্রমাণের অভাবে কেউ শাস্তি পেল না।
২০০৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি হরিয়ানার পানিপথের কাছে বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল ভারত-পাকিস্তান দু’দেশের মধ্যে চলা সমঝোতা এক্সপ্রেস। ট্রেনটি তখন অটারির দিকে যাচ্ছিল। মোট ৬৮ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল ওই বিস্ফোরণে। যাঁদের মধ্যে ছিলেন পাকিস্তানের বেশ কিছু নাগরিক। প্রথমে হরিয়ানা পুলিশ এই বিস্ফোরণের তদন্ত শুরু করলেও বছর তিনেক পরে, ২০১০-এর জুলাই মাসে এনআইএ-র হাতে তদন্তভার যায়। গোটা ষড়যন্ত্রে অভিযুক্ত থাকার অভিযোগে মোট আট জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন এনআইএ-র গোয়েন্দারা। যাঁদের মধ্যে হিন্দুত্ববাদী নেতা স্বামী অসীমানন্দ, লোকেশ শর্মা, কমল চৌহান এবং রাজেন্দ্র চৌধরিকে গ্রেফতার করা হয়। বিস্ফোরণের মূল ষড়যন্ত্রকারী সুনীশ জোশীকে ২০০৭ সালেই গুলি করে খুন করা হয়। বাকি তিন অভিযুক্ত রামচন্দ্র কালসাংরা, সন্দীপ দাঙ্গে এবং অমিতকে এখনও পর্যন্ত ধরা যায়নি।
গত ২০ মার্চ অসীমানন্দ-সহ চার জনকে বেকসুর খালাস করে দেয় আদালত। আজ গোটা বিচার প্রক্রিয়া প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। যেখানে দেখা গিয়েছে বিচারক তাঁর রায়ে স্পষ্ট জানিয়েছেন, এমন একটা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তদের ছেড়ে দিতে গিয়ে তিনি ব্যথিত, ক্ষুব্ধও। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘আদালত কাউকে দোষী সাব্যস্ত করতে গেলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ চায়। জনমত বা রাজনৈতিক কিছু আলোচনা বা পর্যালোচনা সেখানে বিবেচ্য বিষয় হতে পারে না।’’ বিচারক সিংহ আরও জানিয়েছেন, দোষীদের বিরুদ্ধে এমন প্রমাণই আদালতে গ্রহণযোগ্য হবে যা অকাট্য। তাঁর কথায়, ‘‘আদালত গ্রহণযোগ্য প্রমাণ চায়। বিচারকদের যন্ত্রণা বাড়ে যখন এই ধরনের একটা জঘন্য অপরাধের কোনও শাস্তি হয় না। এমনকি আসল অপরাধীদের চিহ্নিতও করা যায় না।’’ বিচারক আরও জানিয়েছেন, আসল দোষীদের শাস্তি দিতে তদন্তকারীদের এমন প্রমাণই পেশ করতে হয় যা সন্দেহের ঊর্ধ্বে। তাঁর কথায়, ‘‘নীতি কথার মাধ্যমে আদালত কাউকে দোষী সাব্যস্ত করতে পারে না। এমন অকাট্য প্রমাণ দোষীদের বিরুদ্ধে জোগাড় করতে হবে, যা উপেক্ষা করার ক্ষমতা কারও থাকবে না।’’