পাকড়াও: গাছে বাঁধা কুমির। বগহায়।— নিজস্ব চিত্র।
ঘুম থেকে উঠে ঘরের দরজা খুলে হতবাক গণ্ডক লাগোয়া গ্রামের এক বাসিন্দা। উঠোনে ঘুরছে পেল্লায় কুমির। সকাল-সন্ধে গ্রামের রাস্তাঘাটে বেরোনোর সাহস পাচ্ছেন না লোকজন। হঠাৎ হঠাৎ সেখানেও সরসরিয়ে হাজির হচ্ছে বিশাল সরীসৃপ!
কুমির-আতঙ্কে ঘুম উড়েছে বিহারের পশ্চিম চম্পারণের বগহা ব্লকের কয়েকটি গ্রামের মানুষের। তাঁরা আঙুল তুলছেন গ্রাম-লাগোয়া গণ্ডক নদীর কুমির প্রকল্পের দিকে। বর্ষায় ফুলেফেঁপে উঠেছে গণ্ডক। তার বুকে তৈরি কুমির প্রকল্পের ‘বাসিন্দা’রা ঢুকছে গ্রামে গ্রামে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, প্রশাসনের কাছ থেকে তেমন কোনও সাহায্য না পেয়ে দেশি উপায়ে জাল ফেলে গ্রামে ঢুকে পড়া কুমির ধরছেন তাঁরা। গাছে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখছেন সেগুলিকে। গত চার দিনে মিলেছে দু’টি কুমির।
দিনচারেক আগে রাতে বাড়ির উঠোনে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন পটখোলি গ্রামের বিবেক কুমার। পোষা কুকুর হঠাৎ তারস্বরে চিৎকার করতে শুরু করে। প্রথমে কিছু টের পাননি তিনি। তখনই দেখতে পান অন্ধকারে বড় কিছু একটা নড়াচড়া করছে উঠোনের এক কোণায়। একটু এগোতেই চোখ চ়ড়কগাছ বিবেকবাবুর। দেখেন বাড়িতে ঢুকেছে কুমির। ভয়ে চেঁচামেচি জুড়ে দেন তিনি। ভিড় জমে যায়। ততক্ষণে পড়শির বাড়িতে ঢুকে যায় কুমিরটি। অনেক কষ্টে সেটি ধরা হয়। খবর পাঠানো হয় বন বিভাগে।
বগহার সরকারি কর্তা ধর্মেন্দ্র কুমার বলেন, ‘‘গ্রামে কুমির ঢোকার খবর পেয়েছি। বন দফতরকে জানানো হয়েছে। পটখোলায় মিলেছে একটি কুমির। অন্যগুলি ধরার চেষ্টা চলছে।’’ প্রশাসনের হিসেবে, ওই এলাকায় প্রায় ৬টি কুমির ঢুকেছে। দু’টি কুমির ধরা গিয়েছে। বন দফতর জানায়, গণ্ডক নদীতে পরীক্ষামূলক ভাবে কুমির প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। বৃষ্টিতে নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় কুমির গ্রামে ঢুকে পড়েছে। বিহারের প্রধান মুখ্য বনপাল দেবেন্দ্র কুমার শুক্লা বলেন, ‘‘এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’