সরকার যতই আশ্বাস দিক, অধিকাংশ এলাকাতেই অবস্থা এখনও এই রকমই। ছবি: এএফপি।
আর ১০ থেকে ১৬ দিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ কেটে যাবে নোট সঙ্কট, সুপ্রিম কোর্টকে জানাল কেন্দ্র। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পক্ষে শুক্রবার সর্বোচ্চ আদালতে জোর সওয়াল করেছেন সরকার। অর্থ মন্ত্রক চুপচাপ বসে নেই, দ্রুত সঙ্কট কাটানোর জন্য সব ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে, জানানো হয়েছে সরকারের তরফে। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে যে সব জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে, সেই মামলাগুলিকে একত্রিত করেই শুনানি শুরু করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শুনানিতে কেন্দ্রের দাবি, সাধারণ মানুষের মধ্যে নোট বাতিল নিয়ে কোনও অসন্তোষ নেই।
৫০০ টাকা আর ১০০০ টাকার নোট কেন্দ্রীয় সরকার আচমকা বাতিল করে দেওয়ার পর থেকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি তীব্র প্রতিবাদে সরব হয়েছে। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ মামলা দায়ের হয়েছে। কিন্তু সরকারি কৌঁসুলি শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছেন, নোট বাতিলকে কেন্দ্র করে একটিও সামাজিক অশান্তির ঘটনা দেশে ঘটেনি। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি সঙ্কটকে খুব বড় করে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে সরকারের তরফে এ দিন অভিযোগ তোলা হয়েছে। তবে সরকারি কৌঁসুলি সর্বোচ্চ আদালতে এ দিন বলেছেন, ‘‘সরকার কোনও কিছু না করে চুপচাপ বসে রয়েছে, তা নয়।’’ নতুন নোট ছাপিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে দেশের নানা প্রান্তে পাঠানোর কাজ চলছে এবং আগামী ১০ থেকে ১৬ দিনের মধ্যে সঙ্কট সম্পূর্ণ কেটে যাবে বলে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে।
নোট বাতিল করার আগে কেন বিকল্প নোট ছাপিয়ে রাখা হল না? সর্বোচ্চ আদালত এ দিন প্রশ্ন করেছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। কেন্দ্র জবাবে জানিয়েছে, আগে থেকে নোট ছাপিয়ে রাখা সম্ভব ছিল না, কারণ তা হলে বিষয়টির গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কা ছিল। ৫০০ আর ১০০০ টাকার নোট যে বাতিল করা হবে, তা গোপন না রাখা গেলে এর উদ্দেশ্য ব্যর্থ হত বলেও সরকারের তরফে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: এক মাসে বদলে গেল চাঁদমারিই! কালো টাকা নিয়ে এখন মুখে কুলুপ
সুপ্রিম কোর্টে অবশ্য সরকারকে এ দিন আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে। মামলাকারীদের অন্যতম কৌঁসুলি তথা সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের কটাক্ষ, নিজেদের নেওয়া সিদ্ধান্তের ধাক্কাই সামলাতে প্রস্তুত নয় এই সরকার। তিনি বলেন, ‘‘এটিএমগুলিতে টাকা নেই, নতুন নোট ভরার জন্য এটিএম যন্ত্রে যে পরিবর্তন দরকার, তা সময় মতো করা হয়নি এবং সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকে বঞ্চিত করা হয়েছে।’’
অব্যবস্থা নিয়ে যে সুপ্রিম কোর্টও সন্তুষ্ট নয়, তাও এ দিন স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যে ন্যূনতম অঙ্কের টাকা ব্যাঙ্ক বা এটিএম থেকে তোলা যাবে বলে সরকার জানিয়েছে, সেই ন্যূনতম টাকাটাও কেন গ্রাহকরা তুলতে পারছেন না? সর্বোচ্চ আদালত প্রশ্ন করেছে সরকারকে। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, সবাই যাতে টাকা পান, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।