ফণীর ছোবলে বাতাসের ছন্দ বদল, আর তাতেই পুড়ছে রাজ্য

আলিপুর হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, মঙ্গলবার কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি বেশি! আগামী তিন দিনে তাপমাত্রা ঊর্ধ্বমুখী তো থাকবেই, আরও কিছুটা বাড়বে। কলকাতা ছাড়াও গরমের দাপট বাড়বে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া-সহ বিভিন্ন জেলায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৯ ০৩:৪৩
Share:

অস্পষ্ট: রেড রোডে মরীচিকা। নিজস্ব চিত্র

দিন দুয়েকের মেঘ-শামিয়ানা উধাও। ফিরে এসেছে গা-জ্বালানো চড়া রোদ। আগামী দিন তিনেকের মধ্যে কোনও সম্ভাবনা নেই কালবৈশাখীর। কারণ, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে হাওয়ার স্বাভাবিক অভিমুখ বদলে গিয়েছে বলে জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। আবহবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, হাওয়ার অভিমুখ স্বাভাবিক হওয়ার আগে কালবৈশাখীর দেখা পাওয়া যাবে না।

Advertisement

আলিপুর হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, মঙ্গলবার কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি বেশি! আগামী তিন দিনে তাপমাত্রা ঊর্ধ্বমুখী তো থাকবেই, আরও কিছুটা বাড়বে। কলকাতা ছাড়াও গরমের দাপট বাড়বে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া-সহ বিভিন্ন জেলায়।

এমনিতে মে মাসে পারদ ঊর্ধ্বমুখীই থাকে। তাই এতে কোনও ‘অস্বাভাবিকতা’ দেখতে পাচ্ছেন না আবহবিদদের একাংশ। কারণ, মে মাসের ৩১ দিনের মধ্যে কমপক্ষে ২৫ দিনই গরমে হাঁসফাঁস করতে হয় বঙ্গবাসীকে। সেই গরমের থেকে সাময়িক মুক্তির একমাত্র ভরসা যে-কালবৈশাখী, ফণীর দাপটে তারও দেখা মেলা ভার বলে জানান তাঁরা!

Advertisement

এপ্রিলে এ বার বেশ কয়েকটি কালবৈশাখীর দেখা মিলেছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, ‘‘ফণীর মতো শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হাওয়ার স্বাভাবিক প্যাটার্ন (ছন্দ) পাল্টে দিয়েছে। ফলে কালবৈশাখী তৈরির জন্য যে-সব প্রাকৃতিক অবস্থার প্রয়োজন হয়, আগামী দু’তিন দিনের মধ্যে সেগুলির দেখা পাওয়া যাবে না!

তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করবে ৩৭-৩৯ ডিগ্রির মধ্যে।’’ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে অর্থাৎ হাওয়ার ‘প্যাটার্ন’ আবার পূর্বাবস্থায় ফিরতে কিছুটা সময় লাগবে বলে জানাচ্ছেন দফতরের অধিকর্তা।

শুক্রবার পুরীতে আছড়ে পড়েছিল ফণী। সকাল থেকে সেখানে তাণ্ডব চালানোর পরে সে সেখান থেকে কটক, ভুবনেশ্বর দিকে অগ্রসর হয়। কলকাতায় তার প্রভাব বোঝা গিয়েছিল সে-দিন গভীর রাত থেকেই। ফণীর প্রভাবে তাপমাত্রা সে-দিন স্বাভাবিকের থেকে কমে গিয়েছিল। রবিবারেও তাপমাত্রা তুলনামূলক কম ছিল। তাপমাত্রা ফের ঊর্ধ্বমুখী হয় সোমবার থেকে। মঙ্গলবার সকাল থেকে চলছে অস্বাভাবিক গুমোট।

আবহবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, গরম বাতাস উপরের দিকে উঠলে তবেই সমুদ্র থেকে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাস সেখানে
ঢুকতে পারে। এ ভাবেই তৈরি হয় কালবৈশাখীর অনুকূল পরিস্থিতি। দেখা মেলে ঝড়বৃষ্টির। কিন্তু সেই ছন্দ-পরম্পরা সাময়িক ভাবে এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। এক আবহবিদের কথায়, ‘‘ঘণ্টায় ২০০-২২০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হলে বাতাসের স্বাভাবিক ছন্দে একটা পরিবর্তন আসবেই। সেটাই হয়েছে।’’ বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের অ্যাটমসফেরিক সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষক
সুব্রতকুমার মিদ্যা বলেন, ‘‘ফণীর ফলে একটা পরিবর্তন এসেছে ঠিকই। তবে ফণীর জন্য যতটা বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল, ততটা হয়নি। তার ফলেও গুমোট ভাবটা বেড়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন