হাতে-হাত: প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিরিল রামফোসা। শনিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে। পিটিআই
নেলসন ম্যান্ডেলা দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে এসেছিলেন ১৯৯৫ সালে। তার প্রায় সিকি শতাব্দী পরে এ বার ভারতে প্রজাতন্ত্র দিবসের বিশেষ অতিথি হিসেবে নয়াদিল্লি এলেন দক্ষিণ আফ্রিকার আর এক প্রেসিডেন্ট সিরিল রামফোসা। তাঁর এই সফরে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে তিন বছরের এক কৌশলগত কর্মসূচি তৈরি করল ভারত। স্থির হয়েছে, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, সন্ত্রাসবাদ বিরোধিতা–সহ বেশ কিছু বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং সমন্বয় করে চলবে দুই দেশ। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলির সাহায্য নিয়ে আর্থিক অপরাধে অভিযুক্ত পলাতকদের গ্রেফতারির ব্যাপারেও দুই দেশ এক সঙ্গে কাজ করবে বলে জানানো হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের শেষবেলায় এই বিষয়টিকে সাফল্য হিসেবেই তুলে ধরছে কূটনৈতিক শিবির। সামগ্রিক ভাবে আফ্রিকার দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নে চিনের সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরেই কার্যত প্রতিযোগিতায় নেমেছে নয়াদিল্লি। নতুন এই কর্মসূচির মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে কৌশলগত দিকগুলির পাশাপাশি বাণিজ্যিক সমন্বয়ের বিষয়েও পাকা কথা হয়েছে বলে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদের মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের সম্পর্ক উত্তরোত্তর বাড়ছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ এখন ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি। এ বছর ভাইব্র্যান্ট গুজরাতে দক্ষিণ আফ্রিকা অংশীদার দেশ ছিল।’
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাণিজ্য এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে চিনের একাধিপত্য নিয়ে ভারত-সহ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি বিভিন্ন মঞ্চে তাদের ক্ষোভ জানিয়েছে। বিষয়টি গলার কাঁটা সাউথ ব্লকের। এই সঙ্কটে এ বার দক্ষিণ আফ্রিকাকেও পাশে পাওয়া গিয়েছে বলেই মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক। জানানো হয়েছে, সমুদ্রপথে বেআইনি কার্যকলাপ চালানো শক্তিগুলির বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার প্রশ্নে দু’দেশ ঐকমত্য হয়েছে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সমৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য এবং নির্বিঘ্নে বাণিজ্য চালানোর দিকটি শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: প্রজাতন্ত্রে নারীশক্তির জয়জয়কার
পাকিস্তানের নাম না করে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, ‘দুই নেতাই বৈঠকে সন্ত্রাসবাদের কড়া নিন্দা করেছেন। কোনও অজুহাত অথবা উদ্দেশ্য সন্ত্রাসবাদকে মান্যতা দিতে পারে না এবং যে কোনও ধরনের জঙ্গিপনা পরিহার করতে হবে — এই নিয়ে সহমত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং দক্ষিণ আফেকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামফোসা।’