আইআইটি যে কী, সে বিষয়ে দশম শ্রেণি অবধি কোনও ধারণাই ছিল না। বাবা দিনমজুর। কেন্দ্রীয় সরকারের একশো দিনের কাজের প্রকল্পের। দিনমজুরি আর চাষ করে যে সামান্য উপার্জন তা দিয়ে সংসারটা হয়তো কোনও মতে চলে যায়। কিন্তু তার বাইরে আবার আইআইটির জন্য আলাদা করে কোথাও পড়তে যাওয়ার কথা কল্পনাও করতে পারত না কোটার ছত্রপুড়া গ্রামের অভিষেক মীনা।
তবু অভিষেকই তার গ্রাম থেকে প্রথম আইআইটিতে পড়তে গেল।
ছোট থেকেই হিন্দিভাষী একটি স্কুলে পড়াশোনা অভিষেকের। দশম শ্রেণির পর তাঁর স্কুলের শিক্ষকদের থেকেই প্রথম আইআইটির কথা জানতে পারে সে।
ওর কথায়, ‘‘দশম শ্রেণির পরীক্ষায় যখন ৭২% নম্বর পেলাম, তখনই বাবাকে ডেকে সঙ্গে স্কুলের শিক্ষকরা কথা বলেন।’’ আর সেই অনুযায়ী অভিষেককে কোটায় আইআইটির জন্য বিশেষ কোচিং ক্লাসে পাঠানো হয়।
এর জন্য ২ শতাংশ সুদে ধারও নিতে হয় অভিষেকের বাবাকে। তবে পাশাপাশি চলতে থাকে স্কুলের পড়াও। বন্ধু এবং শিক্ষকদের সাহায্যে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৮৩ শতাংশ নম্বর পায় অভিষেক। তবে প্রথম বারে আইআইটির কলেজে সুযোগ না পেলেও হাল ছাড়ে না সে। অবশেষে এই বছর দিল্লি আইআইটিতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিল্প উৎপাদন কোর্সে ভর্তি হয়।
সামনের রাস্তাটা যে আদৌ মসৃণ নয় সে কথা জানে অভিষেক। তবে লক্ষ্যে অবিচল সে। এ দেশের প্রত্যন্ত গ্রামেও যাতে সবাই ভাল ভাবে থাকতে পারে, সব রকম সুযোগ পায়— পড়াশোনার শেষে এই নিয়েই গবেষণা করতে ইচ্ছুক সে। নতুন সমাজ গড়ার ইচ্ছায়।