National News

গণধর্ষণের পর মেলেনি সুবিচার, আত্মহত্যা কিশোরীর: দাবি

ওডিশার কোরাপুট এলাকার ওই জায়গাটি মাওবাদী প্রভাবিত। ফলে স্থানীয়দের সুরক্ষার জন্য ওই এলাকায় সব সময়েই পুলিশকর্মী ও আধাসামারিক বাহিনীর পাহারা থাকে। পুলিশের দাবি, অনেক সময়েই পুলিশের উর্দি পরে ঘুরে বেড়ায় মাওবাদীরা। পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকেরা মাওবাদীদের ঘাড়েই সমস্ত দোষ চাপান।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কোরাপুট (ওডিশা) শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ১৪:০৯
Share:

পরিবারের দাবি, স্কুলে যাওয়ার পথে লাঁজিগড় জঙ্গলের ভিতর চার জন পুলিশকর্মী তাদের মেয়েকে গণধর্ষণ করে।

উর্দিধারীরাই তাকে গণধর্ষণ করেছে। অভিযোগ ছিল বছর চোদ্দোর এক দলিত কিশোরীর। উর্দিধারীরাই সেই বয়ান বদলের জন্য চাপ দিয়েছে। এমনকী, টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার মতো গুরুতর অভিযোগও ছিল তার। সোমবার আত্মহত্যা করল ওই কিশোরী। তার পরিবারের অভিযোগ, সুবিচার না মেলাতেই আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে সে। ঘটনার পর শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।

Advertisement

কিশোরীর পরিবারের দাবি ছিল, গত বছরের ১০ অক্টোবর স্কুলে যাওয়ার পথে লাঁজিগড় জঙ্গলের ভিতর চার জন পুলিশকর্মী তাদের মেয়েকে গণধর্ষণ করে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ, গণধর্ষণের অভিযোগে পুলিশের নাম উঠে আসতেই তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা শুরু করে পুলিশ-প্রশাসন।

ওডিশার কোরাপুট এলাকার ওই জায়গাটি মাওবাদী প্রভাবিত। ফলে স্থানীয়দের সুরক্ষার জন্য ওই এলাকায় সব সময়েই পুলিশকর্মী ও আধাসামারিক বাহিনীর পাহারা থাকে। পুলিশের দাবি, অনেক সময়েই পুলিশের উর্দি পরে ঘুরে বেড়ায় মাওবাদীরা। পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকেরা মাওবাদীদের ঘাড়েই সমস্ত দোষ চাপান। এর পর মাওবাদীদের তরফে বিবৃতি দিয়ে দাবি করা হয়, এই ঘটনার সঙ্গে তারা কোনও ভাবেই জড়িত নয়।

Advertisement

আরও পড়ুন
স্বামীকে মারধরের পর ধর্ষণ বাংলার তরুণীকে

দাবি-পাল্টা দাবিতে উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহল। এর পর গত ৭ নভেম্বর ওডিশা পুলিশের মানবাধিকার রক্ষা সেল একটি মেডিক্যাল রিপোর্ট উদ্ধৃত করে দাবি করে, ওই মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়নি। তাতে আরও বিতর্ক তৈরি হয়। এর পরের দিনই ওই ঘটনায় দু’টি আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেন ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। অপরাধদমন শাখা ছাড়াও এক জন সিনিয়র বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে গোটা ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন তিনি।

আরও পড়ুন
শুধু বাজার নয়, ফুটুক নতুন ভারতের ছবিও, মোদীকে আর্জি শিল্পমহলের

গোটা ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ করে ওই কিশোরী। ২৯ ডিসেম্বর ভুবনেশ্বরে একটি অনুষ্ঠানে জনসমক্ষেই ক্লাস নাইনের ওই স্কুলপড়ুয়ার অভিযোগ ছিল, বয়ান বদলের জন্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল আর পি শর্মা তাকে ৯০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে চেয়েছেন। তবে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে সে দাবি উড়িয়ে দেন আর পি শর্মা। ওই কিশোরীর অভিযোগকে ‘ভুয়ো, মনগড়া, ইচ্ছাকৃত এবং উদ্দেশ্যমূলক’ বলে আখ্যা দেন তিনি।

এই ধরনের খবর আপনার ইনবক্সে সরাসরি পেতে এখানে ক্লিক করুন

মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই কিশোরীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই তার দেহ নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন গ্রামবাসীরা। ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন কিশোরীর বাড়ির লোকজনও। পুলিশ-প্রশাসনের উপরেই তাদের মেয়ের মৃত্যুর দায় চাপিয়েছেন তাঁরা। পরিবারের দাবি, সুবিচার না মেলায় এবং সামাজিক কলঙ্কের জন্য আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে তাদের মেয়ে। তার মৃত্যুর জন্য পুলিশ-প্রশাসনই দায়ী।

গোটা রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে বিরোধী দলগুলিও। বিধানসভায় কংগ্রেসের হুইপ তারাপ্রসাদ বাহিনিপতি মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের পাশাপাশি এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন। ঘটনা নিয়ে এ দিন রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বিজেপি-র মহিলা শাখা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা ওডিশার নেতা ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, “আমার মনে হয়, রাজ্য সরকার এই কেসটাকে একটু সিরিয়াসলি নিলে ওই মেয়েটি আজ বেঁচে থাকত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন