সক্রিয় দাউদ, মানছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা

গত জুন মাসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী বিস্তারিত ভাবে জানিয়ে আসেন কী ভাবে দাউদ এখনও গোটা উপমহাদেশে সন্ত্রাস ও মাদকের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৭ ০২:৫৬
Share:

—ফাইল চিত্র।

করাচির ভিলায় সে প্রায় মরণাপন্ন বলে দাবি করেছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে এও দাবি করা হয়েছিল, নোট বাতিলের পরে ভারতে জাল নোট পাচারের কারবার ধাক্কা খেয়েছে। তাই পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের কাছে তার গুরুত্ব কমে গিয়েছে। কিন্তু এখন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারাই স্বীকার করে নিচ্ছেন, মাদক পাচার থেকে জাল নোটে কারবারে এখনও সমান ভাবে সক্রিয় দাউদ ইব্রাহিমের নেটওয়ার্ক। সম্প্রতি গুজরাত উপকূলের কাছে এম ভি হেনরি জাহাজ থেকে মাদক উদ্ধার কিংবা রাজধানী থেকে জাল টাকার পাচারকারী এক ব্যক্তির গ্রেফতারি, সবেতেই দাউদের হাত দেখতে পাচ্ছেন গোয়েন্দারা।

Advertisement

আরও পড়ুন: সালাউদ্দিনকে খুঁজতে মরিয়া ঢাকা ও দিল্লি

গত জুন মাসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী বিস্তারিত ভাবে জানিয়ে আসেন কী ভাবে দাউদ এখনও গোটা উপমহাদেশে সন্ত্রাস ও মাদকের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরে সন্ত্রাস মদত দেওয়ার অভিযোগে মার্কিন প্রশাসন পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়িয়েছে। কিন্তু ভারতীয় গোয়েন্দাদের মতে, এ দেশে দাউদ যে কতটা সক্রিয় তা এম ভি হেনরি জাহাজ থেকে ১৫০০ কেজি হেরোইন উদ্ধার হওয়া থেকেই স্পষ্ট। গুজরাত উপকূলের কাছে আটক হওয়া ওই জাহাজের ধৃত ক্যাপ্টেন ও সঙ্গীরা জেরা জানিয়েছে, ইরানের চাবাহার বন্দর থেকে দুবাই ঘুরে জাহাজটি করাচি আসে। সেখানে ঠায় পরিকল্পনাহীন ভাবে তিন দিন দাঁড়িয়ে ছিল জাহাজটি। কেন তা তার কোনও স্পষ্ট জবাব নেই ধৃতদের কাছেও। ধৃতদের স্বীকারোক্তি, ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে করাচি ছাড়াও সংলগ্ন গদর বন্দরেও গিয়েছিল জাহাজটি। গোয়েন্দারা নিশ্চিত যে, করাচি থেকেই মাদক জাহাজে তোলা হয়েছিল। জাহাজটিকে ভারতীয় নৌসেনারা পোরবন্দরে নিয়ে যান।

Advertisement

পাকড়াও: মাদক পাচারের অভিযোগে আটক জাহাজ এম ভি হেনরি।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই জাহাজের আসল গন্তব্যস্থল ছিল গুজরাতের আলঙ্গ বন্দর। গুজরাতে পুরনো জাহাজ ভেঙে ফেলার জন্য ওই বন্দরটির বিশেষ নাম রয়েছে। গোয়েন্দারা বলছেন, আলঙ্গে জাহাজ ভেঙে ফেলার ব্যবসায় লগ্নি রয়েছে দাউদ ঘনিষ্ঠ অনেক ব্যবসায়ীর। এ ক্ষেত্রে মাদকের পরিমাণ দেখে গোয়েন্দারা নিশ্চিত যে, ১৫০০ কেজি মাদক কোনও বিশ্বস্ত জাহাজ ব্যবসায়ীর মাধ্যমে গুজরাতে ঢোকাতে চেয়েছিল দাউদ। যদিও তার আগেই গ্রেফতার হয়ে যায় পাচারকারীরা।

মাদকের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে চলছে ভারতে জাল নোট পাঠানোর কাজ। নোটবন্দি থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন একশো টাকার নোট ছাপছে দাউদ। সম্প্রতি দিল্লিতে জালনোট পাচারকারী এক বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাকে জেরা করেই এই তথ্য জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন