প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ছবি- সংগৃহীত।
না, সেনাপ্রধানের হয়ে সাফাই গাওয়ার ঝুঁকি নিলেন না প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বরং এড়িয়েই গেলেন।
উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে উত্তরোত্তর মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও তাদের উপর নির্ভর করে গড়ে ও বেড়ে ওঠা রাজনৈতিক দলগুলি নিয়ে যে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়ত, সে সম্পর্কে লখনউয়ে একটি অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর মতামত জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, ‘‘কেউ কোনও একটা বিষয়ে কিছু বলেছেন বা কেউ কিছু বলছেন, এ সব নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না। ও সব নিয়ে আমি মন্তব্য করবই বা কেন?’’
সেনাপ্রধান রাওয়ত তাঁর মন্তব্যে বদরুদ্দিন আজমলের দল এআইইউডিএফ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। সেনাপ্রধান বলেছিলেন, ‘‘অসমে এআইইউডিএফ নামে একটা দল রয়েছে। ওই দলটা বিজেপি’র থেকেও অনেক কম সময়ে বেশি বেড়েছে। দেশে ’৮৪-র সাধারণ নির্বাচনে বিজেপি পেয়েছিল মাত্র ২টি আসন। আর এআইইউডিএফ দলটি তার চেয়ে অনেক দ্রুত গতিতে বাড়ছে অসমে।” প্রসঙ্গত এআইইউডিএফ-এর জন্ম হয়েছিল ২০০৫ সালে। এরই মধ্যে লোকসভায় তার তিনটি আসন। আর অসম বিধানসভায় দলটির বিধায়ক রয়েছেন ১৩ জন। দলটার বাড়-বৃদ্ধির জন্য দায়ী বাংলাদেশ থেকে আসা মুসলিমরা এবং পরিকল্পিত ভাবেই সেই অনুপ্রবেশ চলছে— এমন ইঙ্গিতও ছিল রাওয়তের ভাষণে।
আরও পড়ুন- অধিকারের সীমাটা লঙ্ঘন করা স্বাস্থ্যকর নয়
এআইইউডিএফ দলটির জনভিত্তি কী ভাবে বেড়েছে, কতটা অস্বাভাবিক গতিতে বেড়েছে, অসমের জনবিন্যাস পরিবর্তনের সঙ্গে তার কী সম্পর্ক রয়েছে, দেশের নিরাপত্তা এতে কী ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে, এ সব নিয়েও মন্তব্য করেন ভারতের সেনাপ্রধান।
বিতর্কের সূত্রপাত হয় তার পরেই। প্রশ্ন ওঠে, সংবিধান সম্মত ভাবে গঠিত এবং নির্বাচন কমিশন স্বীকৃত একটি রাজনৈতিক দলের প্রসার দেশের নিরাপত্তার পক্ষে ইতিবাচক না নেতিবাচক, তা বিচার করার অধিকার কী ভাবেই বা পেতে পারেন ভারতের সেনাপ্রধান?
আরও পড়ুন- জঙ্গিয়ানায় মদত চলবে না, ট্রুডোকে পাশে রেখে বার্তা মোদীর
সেনাপ্রধানের ওই মন্তব্যের পর এআইইউডিএফের প্রধান বদরুদ্দিন আজমল তাঁর টুইটে লেখেন, ‘‘জেনারেল বিপিন রাওয়ত রাজনৈতিক মন্তব্য করেছেন। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’
তবে বিতর্ক ওঠার পরপরই, বৃহস্পতিবার সেনা সূত্র থেকে দাবি করা হয়, রাওয়ত কোনও রাজনৈতিক বা ধর্মীয় বিষয়ে কোনও কথা বলেননি।