national news

দাউদাউ জ্বলছে চারপাশ, ৫ তলার জানলা দিয়ে শিশু আঁকড়ে ঝাঁপ মায়ের, মৃত্যু দু’জনেরই

আগুনের ছড়িয়ে পড়ার দ্রুততায় মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যেই বুঝতে পারলেন আবাসিকদের বেশিরভাগ। তারও কিছু পরে বুঝলেন বাকিরা। হোটেলের বেশিরভাগ অংশই তখন আগুনের নিয়ন্ত্রণে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৩:১১
Share:

ছাদ থেকে ঝুলছেন এক ব্যক্তি। দিল্লির করোলবাগের হোটেলে। ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।

চিৎকার, আর্তনাদটা ভেসে আসছিল কানে। ঘুম ভেঙে আশেপাশের মানুষজন যখন বাইরে এলেন, তখন দাউ দাউ করছে জ্বলছে হোটেলের পাঁচতলাটা। সেখান থেকে ছাদ, চারতলা। আরও কিছু পরে তিনতলা, তার পর দোতলায়। ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে আগুন। সঙ্গে বাড়ছে আর্তনাদও।

Advertisement

প্রত্যক্ষদর্শীরা স্পষ্ট দেখতে পেলেন, জানলা দিয়ে সাহায্যের জন্য, বাঁচার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন কেউ কেউ। কিন্তু ভয়াল আগুন ভেদ করে ভিতরে ঢুকে উদ্ধারের সাহস দেখাতে পারলেন না প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউই।

এর মধ্যেই প্রত্যক্ষদর্শীরা দেখলেন পাঁচতলার জানলা দিয়ে কারা যেন ঝাঁপ দিল। ছুটে সে দিকে গিয়ে দেখা গেল, রক্তাক্ত অবস্থায় নীচে রাস্তায় পড়ে এক মহিলা, অদূরে এক শিশু। বুঝলেন, বাঁচার জন্য সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ধরেই ঝাঁপ দিয়েছেন মা। একটা ঝাঁপ, চোখের সামনে দুটো মৃত্যুর রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতে ফের তীব্র আর্তনাদ ভেসে এল উপর থেকে। এ বারে একেবারে ছাদ থেকে। ছাদের রেলিং ধরে ঝুলে রয়েছেন এক ব্যক্তি। পুরো ছাদটা দাউদাউ করে জ্বলছে যে!

Advertisement

আরও পড়ুন: ঘুমের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ল ভয়াল আগুন, দিল্লির বহুতল হোটেলে মৃত অন্তত ১৭

আরও পড়ুন: সনিয়া-কন্যার জন্য হিসেব এলোমেলো মায়া-অখিলেশের

ততক্ষণে অবশ্য দমকল কর্মীরাও এসে গিয়েছেন। কিন্তু ওই ব্যক্তিকে উদ্ধারের সময়টুকু পাওয়া গেল না। কিছু ক্ষণের মধ্যেই হাত ছেড়ে ঝাঁপ দিলেন তিনিও। এক প্রত্যক্ষদর্শীর মোবাইলে ওই ব্যক্তির পড়ে যাওয়ার ভিডিয়োটাও ধরা পড়েছে। অনেকে ভিতরেই ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে নেতিয়ে পড়লেন। মারাও গেলেন অনেকে।

মঙ্গলবার ভোর ৪টে নাগাদ দিল্লির করোলবাগের পাঁচতলা হোটেলের আগুন এ ভাবেই ক্রমে প্রাণ নিল ১৭ জনের। আগুনের গ্রাস থেকে রক্ষা পেয়েছে শুধু প্রথম তলা এবং বেসমেন্ট। ভোরে যখন এই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে, হোটেলের রুমে প্রায় প্রত্যেক আবাসিক ঘুমে আচ্ছন্ন। আগুনের উত্তাপ তখনও স্পর্শ করেনি তাঁদের। বাইরে ভয়াল আগুন যে ক্রমে তাঁদের দিকেই ছুটে আসছে বিন্দুমাত্র টের পাননি করোলবাগের অর্পিত হোটেলের আবাসিকরা। ভয়ঙ্কর ঘটনাটা টের পেতে অবশ্য খুব বেশি সময় লাগলো না তাঁদের। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় আর আধঘণ্টার মধ্যেই বুঝতে পারলেন আবাসিকদের বেশিরভাগ। তারও কিছু পরে বুঝলেন বাকিরা। হোটেলের বেশিরভাগ অংশই তখন আগুনের নিয়ন্ত্রণে। তিন ঘণ্টায় চেষ্টায় দমকলের ২৪টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। উদ্ধার কাজ এখনও চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন