চিনের সঙ্গে তাঁদের প্রথম সামরিক মহড়ার পরপরই ভারত সফরে এলেন নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা ভাণ্ডারী। কূটনীতিকদের মতে, এই সফরে নেপালকে কাছে টানতে বাড়তি প্রয়াস না করে আর উপায় নেই ভারতের। কারণ, এত দিন নেপালের পরিকাঠামোয় বিনিয়োগ, দেদার অর্থ সাহায্য এবং তেল-সহ বিভিন্ন পণ্য রফতানিতেই আটকে ছিল বেজিং। এই হিমালয় রাষ্ট্রের সামরিক প্রস্তুতিতে এ বারই প্রথম পায়ের ছাপ পড়ল ড্রাগনের। চিন-নেপাল যৌথ সামরিক মহড়া নিঃসন্দেহে কিছুটা চাপে ফেলেছে ভারতকে। প্রকাশ্যে অবশ্য চিন প্রসঙ্গে স্পর্শকাতরতা দেখাচ্ছে না নয়াদিল্লি।
নেপাল বিষয়ক যুগ্মসচিব সুধাকর দালিলা জানাচ্ছেন, ‘‘নেপালের প্রেসি়ডেন্টের এই সফরে আমরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সমস্ত দিক খতিয়ে দেখব। কোথায় সহযোগিতা আরও বাড়ানো যায় তা-ও চিহ্নিত করা হবে।’’ মূলত জলসম্পদ, বিদ্যুৎ, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, তরাইয়ে সড়ক নির্মাণ, আন্তঃসীমান্ত রেল সংযোগের মতো বিষয়ে বড় সহযোগিতার পথে হাঁটা হবে এই সফরে।
কাঠমান্ডুকে কাছে টানার চেষ্টা অবশ্য শুরু হয়েছিল ছ’মাস আগেই। দু’দেশের মধ্যে চারটি শীর্ষ পর্যায়ের সফর হয়েছে এর মধ্যে। বিদেশ মন্ত্রক ঘরোয়া ভাবে জানাচ্ছে, গত বছর তরাই অঞ্চলের মদেশীয়দের হয়ে নেপালের উপরে চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়ে চলেছে দিল্লি। কিন্তু চিন নেপালে ভারত-বিরোধী মনোভাবের ঢালাও সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা শুরু করায় সেই নীতি বদল করতে বাধ্য হয়েছে ভারত।
এটা ঘটনা যে কয়েক মাস আগে নয়া সংবিধান ঘিরে মদেশীয়দের বিক্ষোভের জেরে ভারত থেকে পেট্রোলিয়াম-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস নেপালে রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। নেপালে রটে যায়, মদেশীয়দের মাধ্যমে কাঠমান্ডুকে চাপে রাখার জন্যই ভারত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে। গোটা পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে চিন বাড়তি পণ্য রফতানি করতে শুরু করে।