জেএনইউয়ের মিছিলে ফের লাঠি পুলিশের

সন্ধ্যা নামার মুখে তখন কমে এসেছিল পড়ুয়াদের সংখ্যা। পুলিশ ছিল বিপুল সংখ্যায়।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ অধিকারী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:১৫
Share:

লাঠিতে আহত অম্বেডকর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিবাঙ্গ। নিজস্ব চিত্র

ঠিক এক মাসের ব্যবধান। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) পড়ুয়াদের মিছিলে ফের লাঠি চালাল পুলিশ। বর্ধিত ফি পুরোপুরি প্রত্যাহারের দাবিতে গত আড়াই মাসের আন্দোলনে এই নিয়ে মোট তিন বার।

Advertisement

লাঠি-খাওয়া পড়ুয়াদের ক্ষোভ, ‘‘সকালে এই মিছিলে আসতেই বাধা দিচ্ছিল পুলিশ। বেরোতে দেওয়া হচ্ছিল না ক্যাম্পাস থেকে। তার পরে লাঠি। রবিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে এবিভিপির তাণ্ডবের সময়ে পুলিশের এই তৎপরতা কোথায় ছিল?’’

উপাচার্য এম জগদেশ কুমারকে অবিলম্বে বরখাস্ত করা এবং বর্ধিত ফি প্রত্যাহারের দাবিতে আজ মান্ডি হাউস থেকে শাস্ত্রী ভবন (যেখানে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক) পর্যন্ত পদযাত্রার ডাক দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন জেএনইউটিএ। তাতে জেএনইউয়ের অধ্যাপক, ছাত্রছাত্রী ছাড়াও পা মেলান অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও শিক্ষক, সমাজকর্মী এবং সাধারণ মানুষ। ছিলেন সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাট, বৃন্দা কারাট, সিপিআই নেতা ডি রাজা, কংগ্রেস নেতা মুকুল ওয়াসনিক, জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদ জেএনইউএসইউয়ের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট কানহাইয়া কুমার প্রমুখ। ‘আজাদি’, ‘হল্লা বোল’ স্লোগান আর উপাচার্যকে সরানোর দাবিতে সরগরম সেই মিছিল দুপুরে শাস্ত্রী ভবনের কাছে পৌঁছয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: অনড় পড়ুয়ারা, জেএনইউ নিয়ে আজ আবার বৈঠক

বাইরে পুলিশ ব্যারিকেডের সামনে যখন উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে বক্তৃতা দিচ্ছেন বিভিন্ন নেতা, উচ্চশিক্ষা সচিব অমিত খারের কাছে নিজেদের দাবি জানাতে যান জেএনইউএসইউ এবং জেএনইউটিএ-র পদাধিকারীরা। প্রায় দু’ঘণ্টা পরে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। এক দফা কথা সেরে নেন নিজেদের মধ্যে।

এর পরেই জেএনইউএসইউয়ের প্রেসিডেন্ট ঐশী ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু এই উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব নয়। কারণ, ৫ জানুয়ারি যা ঘটেছে, তার আতঙ্ক আমাদের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তাড়া করবে। তার পরে আর সমঝোতার প্রশ্ন নেই।’’ মন্ত্রকে প্রত্যাশিত আশ্বাস না-পাওয়ায় রাষ্ট্রপতি ভবনের দিকে মিছিল এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ডাক দেন তিনি।

আরও পড়ুন: দিল্লি পুলিশের আর কী দোষ, বললেন কেজরীবাল

সন্ধ্যা নামার মুখে তখন কমে এসেছিল পড়ুয়াদের সংখ্যা। পুলিশ ছিল বিপুল সংখ্যায়। ঐশীর ঘোষণার পরেই রাস্তা আটকাতে শুরু করে পুলিশ। ব্যস্ত রাস্তায় গাড়ির ফাঁক গলে মিছিল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন এক দল পড়ুয়া। প্রথমে ধাক্কা দেয়, তার পরে ঘুষি মারে এবং শেষে লাঠি চালায় পুলিশ। মাথা ফাটে অম্বেডকর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া শিবাঙ্গের। যন্ত্রণার চোটে রাস্তায় বসে পড়েন অনেকে। শ্বাসকষ্ট ও আতঙ্কে এক ছাত্রী জ্ঞান হারাতে বসেছিলেন। পড়ুয়াদের আটক করে তিনটি বাসে তোলে পুলিশ। পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। পড়ুয়াদের দাবি, রাস্তায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় ওই লাঠি চালানোর জন্যই। পুলিশের দাবি, বেঁধে দেওয়া রুটে মিছিল করতে বা শাস্ত্রী ভবনের সামনে পড়ুয়াদের বিক্ষোভে বাধা দেওয়া হয়নি। তার পরেও হঠাৎ ব্যস্ত রাস্তা আটকে গোলমাল শুরু হওয়ায় ‘লাঠি চালাতে বাধ্য হয়েছে’ তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন