প্রশ্নপত্রের ‘কোড’ ধরিয়ে দিল ত্রয়ীকে

ধৃতদের দু’জন দিল্লির স্কুলশিক্ষক। পরীক্ষার সিট পড়েছিল তাঁদের স্কুলে। তৃতীয় জন একটি কোচিং সেন্টারের মালিক। ওই পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কে এস রানাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানান কেন্দ্রীয় স্কুল-শিক্ষাসচিব অনিল স্বরূপ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:২৮
Share:

ধৃত: সিবিএসই প্রশ্নপত্র ফাঁস কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হল এক কোচিং সেন্টারের মালিক ও দুই শিক্ষককে। নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই

মসৃণ পরিকল্পনায় ছিল একফোঁটা অসতর্কতা। সেই সূত্র ধরেই সিবিএসই-র দ্বাদশ শ্রেণির অর্থনীতির প্রশ্ন ফাঁসের মূল তিন চক্রীকে ধরল দিল্লি পুলিশ।

Advertisement

ধৃতদের দু’জন দিল্লির স্কুলশিক্ষক। পরীক্ষার সিট পড়েছিল তাঁদের স্কুলে। তৃতীয় জন একটি কোচিং সেন্টারের মালিক। ওই পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কে এস রানাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানান কেন্দ্রীয় স্কুল-শিক্ষাসচিব অনিল স্বরূপ। ধৃতদের দু’দিনের পুলিশি হেফাজত হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রশ্নপত্রের এক কোণে পরীক্ষাকেন্দ্রের ‘কোড’ লেখা থাকে। হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন পাচারের সময়ে তা খেয়াল করেননি চক্রীরা। ওই নম্বর দেখেই পুলিশ জানতে পারে, সেটি দিল্লির বাওয়ানা এলাকার একটি কনভেন্ট স্কুলে যাওয়া প্রশ্নপত্র। এর পরেই ওই স্কুলে তদন্ত চালিয়ে পদার্থবিদ্যার শিক্ষক রোহিত এবং অঙ্কের শিক্ষক ঋষভকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তৌকির নামে এক কোচিং সেন্টার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল দুই শিক্ষকের। তৌকিরের কাজ ছিল প্রশ্ন কিনতে ইচ্ছুক পড়ুয়া খোঁজা। বলা হয়েছিল, পরীক্ষার ঘণ্টাখানেক আগে মোবাইলে প্রশ্নপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

Advertisement

দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখার যুগ্ম কমিশনার অলোক কুমার বলেন, ‘‘প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলার কথা পৌনে দশটায়। ওই দুই শিক্ষক তারও প্রায় ৪০ মিনিট আগে প্যাকেট খুলে ফেলেন। যা নিয়মবিরুদ্ধ।’’ এর পরে মোবাইলে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে তা হোয়াটসঅ্যাপে তৌকিরকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তৌকির তা পাঠান পরীক্ষার্থীদের। অন্তত ৯১৫ জনের কাছে ওই প্রশ্নপত্র গিয়েছিল। লাভের টাকা তিন জনের মধ্যে ভাগ হওয়ার কথা ছিল। অর্থনীতির পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়ের প্রশ্নও ওই পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে ফাঁস হয়েছিল কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: বাগপতের বুকে যেন এক টুকরো বালুচিস্তান

দশম শ্রেণির অঙ্কের হাতে লেখা প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় পরীক্ষার দু’দিন আগে। সিবিএসই চেয়ারপার্সন অনিতা করবালকেও পরীক্ষার আগের রাতে তা পাঠানো হয় ই-মেলে। যে অ্যাকাউন্ট থেকে মেল এসেছিল, তার মালিককে গুগলের সাহায্য নিয়ে আটক করে পুলিশ। ওই ব্যক্তির ছেলে দশম শ্রেণির পরীক্ষা দিয়েছে। ছেলের দাবি, মেলটি সে-ই পাঠিয়েছিল। পরীক্ষার দিনদুয়েক আগে তার মতো অনেকের কাছেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে অঙ্কের প্রশ্নপত্র এসেছিল। সিবিএসই-কে তা জানাতেই বাবার ই-মেল আইডি থেকে চেয়ারপার্সনকে মেল করেছিল সে। ওই প্রশ্নপত্রের উৎসই খুঁজছে পুলিশ। ইতিমধ্যে দলিতদের বন্‌ধের জেরে পঞ্জাবে কাল দশম ও দ্বাদশের পরীক্ষা স্থগিত করেছে সিবিএসই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন