বিপন্নকে আশ্রয় না বহিরাগতে বিপদ! নতুন দ্বন্দ্বে জেএনইউ

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, এতে জেএনইউয়ের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২০ ০৫:১৮
Share:

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়।

দিল্লির হিংসা-বিধ্বস্ত মানুষদের জেএনইউ চত্বরে আশ্রয় দেওয়া যাবে না বলে পড়ুয়াদের উদ্দেশে ফরমান জারি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

এ বিষয়ে গত কাল এক নোটিস জারি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রমোদ কুমার। সেটির বক্তব্য, ‘‘জেএনইউ ক্যাম্পাসকে আশ্রয়স্থল বানানোর আইনি অধিকার নেই কারও।’’ আরও লেখা হয়েছে, ‘‘এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। অন্যথায় উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ জেএনইউ যেন শিক্ষা ও গবেষণার উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান হয়ে থাকতে পারে, সে বিষয়ে যত্নশীল হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে নোটিসে। যদিও তার পরেও বামেদের পরিচালিত এখানকার ছাত্র সংগঠন জেএনইউএসইউ আজ জানিয়ে দিয়েছে, ‘‘১৯৮৪-র হিংসার সময়েও জেএনইউয়ের দরজা খোলা ছিল, আজও এর দরজা খোলা থাকবে। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের যাঁরা শিকার, তাঁদের জন্য জেএনইউয়ের দরজা সব সময় খোলা থাকবে।’’

দিল্লিতে যখন রক্ত ঝরছে, প্রাণ হাতে করে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছেন মানুষ, এখানকার সব পড়ুয়া তখন চুপ করে থাকেননি। জাত-ধর্ম-সম্প্রদায় নির্বিশেষে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তাঁদের অনেকে। জেএনইউএসইউ সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপন্নের পাশে থাকার বার্তা ছড়িয়ে জানিয়েছে, কোন নম্বরে কী ভাবে যোগাযোগ করতে পারেন মানুষ। অভয় জুগিয়েছে, ‘‘আমাদের কাছে আসুন। আমরা পাশে আছি।’’

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, এতে জেএনইউয়ের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। রেজিস্ট্রারের গত কালের ওই নোটিস নিয়ে বিতর্কের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধ্যক্ষ জগদীশ কুমার আজ যুক্তি দেন, ‘‘আমরা চাই দিল্লিতে সম্প্রীতির পরিবেশ থাকুক। ক্ষতিগ্রস্তদের সম্ভাব্য সব রকম সাহায্য দেওয়া উচিত। কিছু পড়ুয়া বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে এসে থাকার খোলা ডাক দিয়েছেন। এঁরা সেই পড়ুয়া, গত জানুয়ারি মাসের ঘটনায় যাঁরা অভিযোগ তুলেছিলেন, ক্যাম্পাসে বহিরাগতেরা ঢুকেছিল। তারাই ওই সময়ের ঘটনার (মুখে কাপড় বেঁধে দলবলে এসে ছাত্রছাত্রীদের মারধর) জন্য দায়ী।’’ উপাধ্যক্ষের কথায়, ‘‘মানবিকতার খাতিরে সাহায্য করায় কোনও ক্ষতি নেই। কিন্তু ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার প্রশ্নটি সবচয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্যই পড়ুয়াদের বলছি, বহিরাগতদের এসে আশ্রয় নেওয়ার খোলা ডাক দেবেন না। আপনারা বরং ক্যাম্পাসে ত্রাণ-সামগ্রী সংগ্রহ করে ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে তুলে দিতে পারেন।’’

রেজিস্ট্রারের জারি করা নির্দেশও বলেছে, ‘‘জেএনইউএসইউ যে ডাক দিয়েছে, তাতে ক্যম্পাসের আবাসিকেরা অনেকে অসুরক্ষিত মনে করছেন। অনেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ফোন করে জানিয়েছেন সে কথা। এখানকার আবাসিকদের যদি কোনও অসুবিধা হয় বা তাঁরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন, তার জন্য আপনারাই দায়ী থাকবেন।’’

এ দিন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার আহ্বান জানিয়ে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শান্তি মিছিল করেছেন সেখানকার পড়ুয়ারা। হিংসা-বিধ্বস্তদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে ক্লাস বয়কটও করেন অনেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন