বরাকের ছাত্ররা মাধ্যমিকে বাংলায় কম নম্বর পাওয়ার কারণ অনুসন্ধানের দাবি উঠল হাইলাকান্দিতে।
আজ হাইলাকান্দির বঙ্গভবনে বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের ভাষা অকাদেমি প্রকাশিত ‘ভাষা ও সংস্কৃতি: বরাক উপত্যকা’ পত্রিকার উন্মোচন অনুষ্ঠানে বরাক তথা অসমের বঙ্গভাষীদের ভাষাসঙ্কট নিয়ে আলোচনায় ওই প্রসঙ্গ তোলেন বরাক বঙ্গের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গৌতমপ্রসাদ দত্ত। ‘বরাক উপত্যকায় বাংলা ভাষা, বিকৃতি ও বিভ্রান্তি’ শীর্ষক ওই আলোচনায় প্রধান বক্তা ছিলেন বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের প্রাক্তন সভাপতি সুবীর কর। বরাক বঙ্গের কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতীশ ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে ওই আলোচনাসভা বসে।
স্বাগত ভাষণ রাখেন বরাক বঙ্গের হাইলাকান্দি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক যজ্ঞেশ্বর দেব। এরপর পত্রিকা উন্মোচনের সময় বরাক বঙ্গের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গৌতমবাবু রাজ্যে বাংলাভাষা ভাষা গভীর সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন। ওই প্রসঙ্গে তিনি বরাকের ছাত্রদের বাংলায় কম নম্বর পাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘বরাকের ছাত্ররা মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অন্যান্য বিষয়ে ভাল নম্বর পেলেও, বাংলায় খারাপ ফল করছে।’’ কেন এমন ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে অনুসন্ধানের দাবি জানান তিনি। গৌতমবাবুর বক্তব্য, প্রাথমিক স্তর থেকে ছাত্রছাত্রীদের শুদ্ধ বাংলা শেখানো জরুরি। গৌতমবাবুর সুরে সুর মিলিয়ে ভাষা-আগ্রাসন প্রতিরোধে অসমের বঙ্গভাষীদের সতর্ক থাকার আর্জি জানান বরাকের বিশিষ্ট লেখক-গবেষক সঞ্জীব দেবলস্কর। বরাকে বাংলা ভাষার বিকৃতি এবং বিভ্রান্তিতে তিনি তীব্র উদ্বেগপ্রকাশ করেন।
প্রধান বক্তা সুবীর কর অসমের বঙ্গভাষীদের এই পরিস্থিতির জন্য রাজনৈতিক নেতাদের সমালোচনা করেন। সুবীরবাবুর মতে, ভাষা আন্দোলনের সময় থেকেই অসমের বঙ্গভাষীরা সঙ্কটে। অসমে বাঙ্গালিদের উন্নয়ন হয়নি, আর্থিক সাহায্য মেলেনি, এমনকী দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে তৈরি হওয়া শিলচরের আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ও উপত্যকাবাসীর আশা পূরণ করতে পারেনি। সুবীরবাবুর মতে, বরাকের শিক্ষকদেরও বাংলা চর্চার প্রয়োজন রয়েছে। বরাক বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতীশ ভট্টাচার্য ভাষার আগ্রাসন রোধে বরাক বঙ্গ কী ভাবে কাজ করছে, তার বিবরণ তুলে ধরেন। বরাক বঙ্গের সদস্য ইসহাক আলি বড়ভুঁইঞা, হীরকজ্যোতি চক্রবর্তী, বিজয় কুমার ধর, দীপককান্তি আইচ, বরুণ কুমার সিংহ, ইন্দিরা ভট্টাচার্য, ঋতা চন্দ, হিলালউদ্দিন লস্করও আলোচনায় যোগ দেন।