অস্বস্তি এড়াতে নোটবন্দি (ডিমনিটাইজেশন) নিয়ে অর্থ সংক্রান্ত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্ট, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে ধামাচাপা দিয়ে দিল বিজেপি।
রিপোর্টে বলা হয়েছিল, নোটবন্দির জন্য দেশের জিডিপি এক শতাংশ কমেছে। তা পছন্দ হয়নি বলে সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিতে সেই রিপোর্ট গৃহীত হওয়া তো দূরের কথা, তা নিয়ে কোনও আলোচনাও করতে দেওয়া হল না।
‘কালো টাকা রুখতে’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৬-র ৮ নভেম্বর নোটবন্দির ঘোষণা করেছিলেন। তার পরেই পুরনো ৫০০ এবং ১ হাজার টাকার নোট বাতিল হয়ে যায়।
পরে অবশ্য নোটবন্দি অভিযানের হিসেবনিকেশ করতে গিয়ে দেখা যায়, যতটা কালো টাকা উদ্ধারের আশা করা হয়েছিল, তার মাত্র কয়েক শতাংশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। যা সিন্ধুতে বিন্দুর মতো!
কংগ্রেস নেতা, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলির সভাপতিত্বে অর্থ সংক্রান্ত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্টেও তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে দেখানো হয়, প্রধানমন্ত্রী মোদীর নোটবন্দি অভিযান শুধু যে কালো টাকা উদ্ধারে ব্যর্থ হয়েছে, তা-ই নয়; দেশের জিডিপিরও সাড়ে সর্বনাশ ঘটিয়েছে। ওই অভিযানের জন্য দেশের জিডিপি পড়েছে অন্তত এক শতাংশ।
আরও পড়ুন- নোটবন্দিতে লাভটা কী হল আমজনতার? এ বার প্রশ্ন নীতীশেরও
আরও দেখুন- ১০ রাজ্যে এটিএমে টাকার আকাল চরমে, মুখ খুলতে হল জেটলিকে
রিপোর্টের খসড়া তৈরির অন্যতম দায়িত্বে ছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। গত মার্চেই রিপোর্টের খসড়া তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু ৩১ সদস্যের স্ট্যান্ডিং কমিটির ১৭ জন বিজেপি সদস্যের বাধায় সেই খসড়া নিয়ে কোনও আলোচনাই সম্ভব হয়নি কমিটিতে। কমিটির বিজেপি সদস্যরা জোট বেঁধে রিপোর্টের বিরোধিতা করেন গত ১৯ মার্চ। পরিস্থিতি ভোটাভুটির দিকে এগোয়।
কিন্তু ভোটাভুটি হলে লাভের চেয়ে ক্ষতির আশঙ্কাই ছিল বেশি। সে ক্ষেত্রে সাংসদ নিশিকান্ত দুবের নেতৃত্বে স্ট্যান্ডিং কমিটির বিজেপি সদস্যরা পাল্টা রিপোর্ট পেশের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাতে নোটবন্দি নিয়ে কোনও রিপোর্টই সর্ব সম্মতিতে পাশ হোত না অর্থ সংক্রান্ত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিতে।
মার্চে খসড়া রিপোর্ট তৈরি হয়ে যাওয়ার পর প্রতি সপ্তাহেই রিপোর্টের ওপর আলোচনা পিছিয়ে দেওয়া হতে থাকে, নানা অজুহাতে। শেষ বৈঠকটি ছিল এই সপ্তাহে। কিন্তু সেই বৈঠকও অনির্দিষ্ট কালের জন্য পিছিয়ে যায়। কমিটির মেয়াদ ফুরোচ্ছে ৩১ অগস্ট।