নোট বাতিলের প্রেক্ষিতে বিহার ও ঝাড়খণ্ডের প্রায় ৬০০টি জনধন অ্যাকাউন্টে মাওবাদীদের টাকা জমা করা হয়েছে বলে মনে করছে আয়কর দফতর। ওই অ্যাকাউন্টগুলির তথ্য বিশ্লেষণের পরে আয়কর অফিসারদের এই ধারণা। নোট বাতিল পর্ব শেষ হওয়ার পরে আজ থেকে প্রতিটি অ্যাকাউন্ট ধরে তদন্তও শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা।
আয়কর দফতরের প্রিন্সিপাল ডিরেক্টর (তদন্ত) অশোক কুমার সিংহের কথায়, ‘‘বিহার-ঝাড়খণ্ডের ওই অ্যাকাউন্টগুলিতে গড়ে এক থেকে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত জমা করা হয়েছে। সব মিলে অ্যাকাউন্টগুলিতে প্রায় ১০ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা জমা পড়েছে।’’ তবে বিহারের চেয়ে ঝাড়খণ্ডে জনধন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেশি বলে জানান তিনি। আয়কর দফতরের তথ্য বলছে, বিহার ও ঝাড়খণ্ডের মাওবাদী প্রভাবিত জেলাগুলির ওই ব্যাঙ্ক-অ্যাকাউন্টগুলি ধরে ধরে তদন্ত হবে।
তদন্তে অ্যাকাউন্টগুলির সঙ্গে মাওবাদী যোগ প্রমাণ হলে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে বলেও জানান আয়কর কর্তারা। দফতরের প্রিন্সিপাল চিফ কমিশনার (বিহার-ঝাড়খণ্ড) এস টি আহমেদ জানান, ‘‘আরা জেলার এক ব্যক্তির জনধন অ্যাকাউন্টে নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পরে ৪০ লক্ষ টাকা জমা হয়েছিল। তা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’ জনধন অ্যাকাউন্ট ছাড়াও ধর্মীয়, শিক্ষা ও সামাজিক ক্ষেত্রে কাজ করছে এমন প্রায় ১৫০টি ট্রাস্টকে নোটিস পাঠিয়েছে আয়কর দফতর। কয়েকটি রাজনৈতিক দলকেও নোটিস পাঠিয়ে তাঁদের অ্যাকাউন্টের জমা পড়া টাকার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
আয়কর দফতরের হিসেব অনুযায়ী, ৯ নভেম্বর দেশের সমস্ত জনধন অ্যাকাউন্ট মিলিয়ে আমানতের পরিমাণ ছিল ৪৫ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা। ১০ নভেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে জমা পড়ে ৪১ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। এক আয়কর কর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তরপ্রদেশের জনসভায় জনধন অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে মুখ খুলতেই এই অ্যাকাউন্টগুলিতে টাকা জমার পরিমাণ কমতে থাকে।
নির্বাচন কমিশনের তরফে কেন্দ্রীয় প্রত্যক্ষ কর বোর্ডকে (সিবিডিটি) চিঠি দিয়ে ২৫৫টি রাজনৈতিক দলকে ‘ডিলিস্টেড’ করার কথা জানানো হয়েছে। ওই তালিকায় বিহারের দশটি রাজনৈতিক দলও রয়েছে। সেই দলগুলির অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখছে আয়কর বিভাগ। ওই রাজনৈতিক দলগুলির অ্যাকাউন্টেও মাওবাদীদের টাকা থাকার সম্ভবনা রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।