National News

মেঘলা চিতাবাঘ, মার্বলড ক্যাটের ঘনত্বে সেরা মিজোরামের ডাম্পা

কাকতালীয় হলেও, ভারতের বিশ্বকাপ দলে উত্তর-পূর্বের খেলোয়াড়ই ৯ জন। আর ভারতে মেঘলা চিতাবাঘের ৯৯ শতাংশের ঘাঁটিও এই উত্তর-পূর্বেই।

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ১৯:৪৭
Share:

ক্লাউডেড লেপার্ড। — নিজস্ব চিত্র।

চার দিন পরেই ভারতে শুরু অনূর্ধ-১৭ ফুটবল বিশ্বকাপ। বিপন্ন প্রজাতির মেঘলা চিতাবাঘ 'খেলিও' (খেল-এর সঙ্গে লেপার্ডের লিও যোগ করে নাম দেওয়া হয়েছে) এই বিশ্বকাপের ম্যাসকট। এই মোক্ষম সময়ে পশু বিশেষজ্ঞ প্রিয়া সিংহের সমীক্ষা 'খেলিও'র মুখের হাসি আরও খানিক চওড়া করল। মিজোরামের ডাম্পা ব্যাঘ্র প্রকল্পে প্রিয়ার পাতা ক্যামেরা ট্রাপে ধরা পড়ল বিরল বিড়াল প্রজাতির প্রাণী মেঘলা চিতাবাঘ ও মার্বলড ক্যাটের বিস্তর গতিবিধি। সমীক্ষার ফল দেখাচ্ছে, সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে ডাম্পায় মেঘলা চিতাবাঘের ঘনত্ব সর্বাধিক।

Advertisement

আরও পড়ুন, দরজা ভাঙতেই মেয়ে দেখলেন সোফায় বাবার কঙ্কা

আরও পড়ুন, ‘ভূতেরা’ নাকি তৈরি করেছিল এই শিবমন্দির!

Advertisement

কাকতালীয় হলেও, ভারতের বিশ্বকাপ দলে উত্তর-পূর্বের খেলোয়াড়ই ৯ জন। আর ভারতে মেঘলা চিতাবাঘের ৯৯ শতাংশের ঘাঁটিও এই উত্তর-পূর্বেই।

গোল্ডেন ক্যাট। — নিজস্ব চিত্র।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ শাখা ও রিসার্চার ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেসন সংস্থা, ইকোসিস্টেম ইন্ডিয়ার সাহায্যে পশু বিশেষজ্ঞ প্রিয়া সিংহ ২০১৪ সাল থেকে মিজোরাম-চট্টগ্রাম সীমান্তে থাকা লুসাই পাহাড়ের ইন্দো-বর্মা জীববৈচিত্র ক্ষেত্রের অন্তর্গত ডাম্পায় গবেষণা চালাচ্ছেন। পাহাড়-জঙ্গলের ২৫০ থেকে ১১০০ মিটার উচ্চতায় ৮০ বর্গ কিলোমিটারে ৭৪ জোড়া ক্যামেরা পাতেন তিনি। মোট ৪৯৬২টি ছবির মধ্যে বেছে নেওয়া হয় মেঘলা চিতাবাঘের ৮৪টি ছবি ও মার্বলড ক্যাটের ৩৬টি ছবি। ছবিগুলি নিয়ে গবেষণা চালিয়ে ৬১টি ছবি থেকে ১০টি মেঘলা চিতাবাঘ ও ২২টি ছবি থেকে ১০টি মার্বলড ক্যাটের ছবি শনাক্ত করা হয়েছে। ঘনত্বের বিচারে প্রতি ১০০ বর্গ কিলোমিটারে মেঘলা চিতাবাঘের সংখ্যা ৫.১৪। মার্বলড ক্যাটের ক্ষেত্রে সংখ্যাটি ৫.০৩। মানসে বাঘ সুমারির সময়ে মেলা তথ্য অনুযায়ী সেখানে মেঘলা চিতাবাঘের ঘনত্ব ৪.৭৩। মেঘলা ও মার্বলড দুই-ই নিশাচর প্রাণী। তাই তাদের দেখা মেলাও কষ্টকর। সম্প্রতি কেপ্রানের গ্রামবাসীরা একটি মেঘলা চিতাবাঘকে ফাঁদ পেতে ধরে বন দফতরের হাতে তুলে দিয়েছে।

লেপার্ড ক্যাট। — নিজস্ব চিত্র।

প্রিয়া জানান, ক্যামেরা ট্র্যাপে আরও মিলেছে বিপন্ন সোনালি বেড়াল, লেপার্ড ক্যাট, সান ভলুক, এশীয় কালু ভলুক, সোনালি শিয়াল ও ঢোলের ছবি। এই ছবিগুলি ডাম্পার জীব বৈচিত্র আরও বেশি করে সামনে আনল। এর আগে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে, প্রিয়ার ক্যামেরা ট্র্যাপেই ডাম্পায় ব্লু পিট্টার ছবি সাতবার ধরা পড়েছিল। পিট্টা পাখি বংশের ৩০টি প্রজাতির মধ্যে, ভারতে ছ'টির দেখা মেলে। নীল পিট্টা তার মধ্যে বিরলতম। ভারতে সেই প্রথম নীল পিট্টার ছবি ক্যামেরাবন্দি হয়েছিল।

মার্বল্ড ক্যাট। — নিজস্ব চিত্র।

বনকর্তাদের মতে ডাম্পার আশপাশে বসতি বিস্তার, পাম তেলের চাষ, ঝুম চাষের ফলে বিড়াল প্রজাতির প্রাণীদের আবাস ও তাদের খাদ্য ক্রমেই কমছিল। ডাম্পায় রয়্যাল বেঙ্গলও এখন বিরল। রাজ্য সরকার অরণ্য বাঁচাতে নতুন জমি নীতি নিয়েছে। সংরক্ষণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মেঘলা ও মার্বলড বিড়ালের সংখ্যা বৃদ্ধি সেই পদক্ষেপের সাফল্য প্রমাণ করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন