‘মা বিন্দাবাসিনী মহিলা এবং বালিকা সংরক্ষণ গৃহ’ নামের দেওরিয়ার সেই হোম।— ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়া হোমের যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় ফের সামনে এল চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হোমের মেয়েদের নেশা করিয়ে ‘প্রভাবশালী’ অতিথিদের বাড়িতে পাঠানো হত। নির্যাতিতাদের বয়ান রেকর্ড করে একের পর এক তথ্য সামনে নিয়ে আসছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। বয়ান রেকর্ড করা হয়েছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশের উইমেন সেলে। পরে এই তথ্যগুলির ভিত্তিতে ইলাহাবাদ হাইকোর্টে চার্জশিট জমা করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
হোমেরই ১২ বছরের এক নির্যাতিতার অভিযোগ, ‘ছেলেদের কাছে পাঠানোর আগে আমাদের কোনও একটা ওষুধ খাওয়ানো হত।উনি বলতেন, এই ওষুধটা খেলে তোমাদের আর ব্যথা করবে না।’
১৩ বছরের আর এক আবাসিকের অভিযোগ, ‘ম্যাডাম আমাদের বকাবকি করত। আর বলত, পুলিশের সামনে কিস্যু বলবি না। বললেই মেরে ফেলব। আর প্রভাবশালী লোকজন এলেই তাঁদের সঙ্গে ফুর্তি করবি।’
গত অগস্টেই দেওরিয়া হোমের যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় গোটা দেশ জুড়ে। দিনের পর দিন অত্যাচার সইতে না পেরে ১১ বছরের এক নাবালিকা হোম থেকে পালিয়ে এসেছিল। আর তার পরেই সে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল।
আরও পড়ুন: ঘুষ নিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, তদন্তে নাক গলিয়েছেন ডোভাল! বিস্ফোরক সিবিআই কর্তা
সে সময় পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছিল, ‘মা বিন্দাবাসিনী মহিলা এবং বালিকা সংরক্ষণ গৃহ’ নামের ওই হোমই ছিল ৪২ জন আবাসিকের ঠিকানা। ২৪ জন আবাসিককে উদ্ধার করতে পেরেছিল পুলিশ। তবে খোঁজ মেলেনি আরও ১৮ জনের। মূলত ১৫-১৮ বছর বয়সী মেয়েরাই থাকত সেখানে। সরকারি সাহায্যের পাশাপাশি হোমটি চালাতেন গিরিজা ত্রিপাঠী এবং মোহন ত্রিপাঠী নামের এক যুগল। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছিল হোম থেকে পালিয়ে আসার পর ১১ বছরের মেয়েটি যে ম্যাডামের কথা বলেছিল তিনি আসলে গিরিজা ত্রিপাঠীই।
আরও পড়ুন: ভারতে অ্যান্টিবায়োটিকের অভিশাপের বলি বছরে ৫৮ হাজার শিশু!
২০১৭-তে দেশ জুড়ে বিভিন্ন হোমে যখন তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছিল সিবিআই, সে সময় দেওরিয়ার এই হোমের বেশ কিছু অনিয়ম সামনে আসে। তার পরেই সরকারি স্বীকৃতি বাতিল করে দেওয়া হয় হোমটির। কিন্তু তার পরেও ত্রিপাঠী দম্পতি হোমটি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। গ্রেফতার করা হয় ত্রিপাঠী দম্পতি ও তাঁদের মেয়েকে। সিল করে দেওয়া হয় হোমটি। তাঁদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়েরও করে পুলিশ।