দীনেশ্বর শর্মা।
কাশ্মীরে মৌলবাদ ছড়ানো বন্ধ না হলে পরিস্থিতি সিরিয়া, ইয়েমেনের মতো হয়ে যেতে পারে বলে মনে করেন কেন্দ্রের বিশেষ দূত দীনেশ্বর শর্মা। তাঁর মতে, পরিস্থিতি সে দিকে এগোলে কাশ্মীরি সমাজের ঐতিহ্য একেবারে নষ্ট হয়ে যাবে। তবে কংগ্রেসের দাবি, বিশেষ দূত নিয়োগ করলেও কাশ্মীর নিয়ে সরকারের মনোভাব বদলায়নি।
১৯৯০-এর দশকে কাশ্মীরে তুমুল জঙ্গি সন্ত্রাসের মধ্যে সেখানে গোয়েন্দা অফিসার হিসেবে কাজ করেছেন দীনেশ্বর। বিশেষ দূত নিযুক্ত হওয়ার পরে কাশ্মীরের তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে আলোচনাকেই বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। তাঁর মতে, পাকিস্তান ইতিমধ্যেই ওই যুব সম্প্রদায়ের বড় অংশকে বিচ্ছিন্নতাবাদে দীক্ষা দিতে পেরেছে। তাঁর কথায়, ‘‘কাশ্মীরের যুব সম্প্রদায়কে স্থির করতে হবে তারা বিদেশি শক্তির হয়ে কাজ করবে না নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার পথে এগোবে।’’ আলোচনার ক্ষেত্রে দীনেশ্বরকে যে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে তা আজ ফের বোঝানোর চেষ্টা করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার তথা বিজেপি। কাশ্মীরের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা রাম মাধব আজ বলেন, ‘‘যাঁরা আলোচনা চাইবেন তাঁদের সকলের সঙ্গেই কেন্দ্রের বিশেষ দূত কথা বলবেন। বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতারা চাইলে তাঁদের সঙ্গেও আলোচনা হতে পারে।’’
কিন্তু কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের মতে, মোদী সরকার দীনেশ্বরকে নিয়োগ করে অন্য দিকে দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছে। আসলে কাশ্মীরে তারা দমননীতিই অনুসরণ করতে চায়। চিদম্বরমের মতে, দীনেশ্বর যে ‘মধ্যস্থতাকারী’ নন তা জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ। সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত জানিয়েছেন, দীনেশ্বরের নিয়োগে জঙ্গি দমন অভিযানের উপরে কোনও প্রভাব পড়বে না। ওটাই সরকারের আসল চেহারা। তাঁর দাবি, ‘‘আজাদি বলতে কাশ্মীরিদের বড় অংশ স্বায়ত্তশাসনের কথাই বোঝাতে চান। সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ মেনে তাঁদের আরও স্বায়ত্তশাসন দেওয়া যেতেই পারে।’’ চিদম্বরমকে জবাবও দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেসের ভুল নীতির জন্যই কাশ্মীরে সমস্যা তৈরি হয়েছে। আজাদি বা আরও স্বায়ত্তশাসনের কথা বলা জাতীয় স্বার্থের পক্ষে অনুকূল নয়।’’
এরই মধ্যে বাহিনীর উদ্বেগ বাড়িয়ে জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিয়েছে ইশফাক আহমেদ দার নামে দক্ষিণ কাশ্মীরের এক পুলিশকর্মী। পুলিশ জানিয়েছে, ২০১২ সালে পুলিশে যোগ দেয় শোপিয়ানের হেফ শ্রীমল গ্রামের বাসিন্দা ইশফাক। কাঠুয়ার পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে মোতায়েন ছিল সে। সম্প্রতি ছুটি নেয় ইশফাক। গত সোমবার কাজে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও ফেরেনি সে। আজ এ কে-৪৭ রাইফেল হাতে ইশফাকের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তার পরেই পুলিশ জানায়, ইশফাক পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবায় যোগ দিয়েছে।