গর্ভপাতের আর্জি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল বছর দশেকের মেয়েটি। কিন্তু ডাক্তারি পরীক্ষায় দেখা গেল ধর্ষিতা ওই বালিকার ভ্রুণের বয়স ২৬ সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে। তাই গর্ভপাতের আর্জিও খারিজ হয়ে গেল। মঙ্গলবার এমনই ‘বিতর্কিত’ সিদ্ধান্ত নিল চণ্ডীগড় জেলা আদালত।
মেয়েটির বাবা সরকারি কর্মচারী। মা গৃহবধূ। পুলিশ জানিয়েছে, বারংবার মেয়েটিকে ধর্ষণ করে তার নিজের মামা। যার জেরে গর্ভবতী হয়ে পড়ে সে। এত কম বয়সে গর্ভবতী হওয়ার ঘটনা দেখে হতচকিত চিকিৎসকেরাও। মেয়েটির স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তার অভিভাবকেরা। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ করে দিল আদালত। আদালত জানিয়েছে, ১৯৭১-এ ভারতীয় গর্ভপাত আইন অনুসারে ২০ সপ্তাহ অতিক্রম করে গেলে গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া হয় না। কারণ নির্দিষ্ট সময়ের পরে গর্ভপাত হলে মায়ের প্রাণের ঝুঁকি থাকে। একমাত্র ভ্রুণের কোনও রকম অস্বাভাবিকতা ধরা পড়লে সেক্ষেত্রেই ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে। ভ্রুণে অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ায় চলতি বছরেই বারাসতের এক তরুণ দম্পতিকে ২৬ সপ্তাহেও গর্ভপাতের অনুমতি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু এই ক্ষেত্রে সেরকম কোনও অস্বাভাবিকতা ধরা না পড়ায় অনুমতি দেয়নি আদালত।
আরও পড়ুন: ভিডিও প্রমাণ করছে বহাল তবিয়তেই জেলে রয়েছেন শশিকলা
চণ্ডীগড়ের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিকাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের চিকিৎসক রেশমি বাগ্গা জানিয়েছেন, গর্ভপাতের জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় আছে। যেহেতু এত কম বয়সে সেই বিষয়ে কোনও ধারণাই জন্মায় না, সেক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়। তাঁর কথায়, মেয়েটি বুঝতেই পারেনি কখন সে গর্ভবতী হয়ে পড়েছিল। বাড়ির লোকেরা যখন বিষয়টি খেয়াল করে তখন অনেক সময় পেরিয়ে গিয়েছে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওই বালিকার ক্ষেত্রে সমস্যা খুবই গুরুতর। কারণ সন্তান ধারণ করার জন্য ‘পেলভিক বোন’-এর যে গঠন থাকা দরকার, দশ বছর বয়সে সেটা তৈরি হয় না। ফলে এই গর্ভাবস্থা সমস্যা অনেক বাড়িয়ে দেবে। নর্মাল ডেলিভারি মেয়েটির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। আবার সিজারের ক্ষেত্রেও প্রাণের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। তাই আদালত গর্ভপাতের অনুমতি না দিলে আগামী দিনে সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই।