সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছিল, সোমবার দিল্লি বিস্ফোরণে ব্যবহৃত গাড়িটি চালাচ্ছিলেন উমর। ছবি: সংগৃহীত।
প্রাথমিক ভাবে যা মনে করা হচ্ছিল, শেষমেশ তাতেই সিলমোহর পড়ল। ডিএনএ পরীক্ষার পর জানা গেল, দিল্লি বিস্ফোরণে ব্যবহৃত হুন্ডাই আই২০ গাড়িটি চালাচ্ছিলেন উমর নবিই। একাধিক সংবাদমাধ্যম তদন্তকারীদের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, গাড়িতে পাওয়া উমরের দেহাংশের সঙ্গে তাঁর মা এবং ভাইয়ের ডিএনএ মিলিয়ে দেখা হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার পর তদন্তকারীরা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত যে, গাড়িটি চালাচ্ছিলেন চিকিৎসক উমর উন-নবি বা উমর মহম্মদ।
ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আগেই জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামা থেকে আটক করা হয়েছিল উমরের মাকে। দিল্লিতে বিস্ফোরণের পরেই সোমবার রাতে উমরের মা এবং দুই ভাইকে আটক করা হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে দিল্লি পুলিশের এক কর্তা সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে বলেন, “সন্দেহভাজনের মাকে আমরা ডিএনএ-র নমুনা সংগ্রহের জন্য আটক করেছিলাম। বিস্ফোরণস্থল থেকে পাওয়া দেহাংশের সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।”
দিল্লিতে বিস্ফোরণের পরেই হুন্ডাই আই২০ গাড়িটির নম্বর প্লেটের সূত্র ধরে জনৈক মহম্মদ সলমন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছিল পুলিশ। বিস্ফোরণে উড়ে যাওয়া গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন তাঁরই নামে করা ছিল। পুলিশি জেরায় সলমন জানিয়েছেন, তিনি গাড়িটি পুলওয়ামার এক বাসিন্দাকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। সেই বাসিন্দাই উমর। বিস্ফোরণের আগে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে গাড়ির চালকের আসনে উমরকে বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল। যদিও পুলিশ এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানায়নি। এ বার ডিএনএ পরীক্ষাতেও প্রমাণিত হল যে, গাড়িটি উমর চালাচ্ছিলেন।
লালকেল্লার কাছে একটি সাদা রঙের হুন্ডাই আই২০ গাড়িতে বিস্ফোরণ হয় সোমবার। তাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২। ওই দিনই সকালে ফরিদাবাদে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক পদার্থ উদ্ধার করেছিল জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ এবং হরিয়ানা পুলিশের যৌথ দল। গ্রেফতার করা হয়েছিল মুজ়াম্মিল আহমেদ-সহ একাধিক ব্যক্তিকে। মুজ়াম্মিলের ফোন ঘেঁটে পুলিশ জানতে পেরেছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে একাধিক বার তিনি লালকেল্লার সামনে গিয়েছিলেন। অনুমান, প্রজাতন্ত্র দিবসে হামলার রেকি করা হয়েছিল। শুধু মুজ়াম্মিল নন। আর এক চিকিৎসক উমর নবিও তাঁর সঙ্গে লালকেল্লার সামনে গিয়েছিলেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
অন্য দিকে, ‘ঘাতক’ উমরের দ্বিতীয় একটি গাড়িরও সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। লাল রঙের ওই ফোর্ড ইকোস্পোর্ট গাড়িটির খোঁজে বুধবার সকাল থেকেই দিকে দিকে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। হরিয়ানার একটি বাড়ির সামনে থেকে গাড়িটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। তার গতিবিধি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গাড়িটির ভিতরে বিস্ফোরক পদার্থ থাকতে পারে বলেও সন্দেহ। ফলে আপাতত তা নিয়ে সতর্ক তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীদের অনুমান, ঘটনার সঙ্গে জড়িতেরা লাল রঙের ইকোস্পোর্ট গাড়িটিকেও নানা কাজে ব্যবহার করতেন। এমনকি, লালকেল্লার সামনে বিস্ফোরণের পরে ওই গাড়ি নিয়ে আসা হয়েছিল হরিয়ানার গ্রামে। কেউ বা কারা গাড়িটি ঘটনার পরেও ব্যবহার করেছেন। সেই কারণেই এই গাড়িতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রমাণ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এমনকি, থাকতে পারে বিস্ফোরক পদার্থও।