ডন বস্কোর মূর্তি ভাঙল ক্ষুব্ধ জনতা

উন্মোচনের আগেই হামলায় ভাঙল ডন বসকোর প্রমাণ আকারের মূর্তি। গুয়াহাটির ঘটনা। ১৮১৫ সালের ১৬ অগস্ট ইতালির পিডমন্টে জন্মগ্রহণ করা শিক্ষাবিদ, যাজক ও ধর্মপ্রচারক সেন্ট জন বসকো বা ডন বসকোর জন্মের দ্বিশতবর্ষ পালন হচ্ছে উত্তর-পূর্বে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৫ ০৩:০৪
Share:

উন্মোচনের আগেই হামলায় ভাঙল ডন বসকোর প্রমাণ আকারের মূর্তি। গুয়াহাটির ঘটনা।

Advertisement

১৮১৫ সালের ১৬ অগস্ট ইতালির পিডমন্টে জন্মগ্রহণ করা শিক্ষাবিদ, যাজক ও ধর্মপ্রচারক সেন্ট জন বসকো বা ডন বসকোর জন্মের দ্বিশতবর্ষ পালন হচ্ছে উত্তর-পূর্বে। ডন বসকো সোসাইটি ১৯২২ সাল থেকে উত্তর-পূর্বে শিক্ষা প্রসারের কাজে রয়েছে। তাঁর স্মৃতিতে শিলং, ডিমাপুর ও আগরতলায় মূর্তি বসানো হয়েছে। এ বার গুয়াহাটিতে ডন বসকোর জন্মদ্বিশতবর্ষ উদযাপন উৎসব উপলক্ষে ভরলু নদীর পারে, নবীনচন্দ্র বরদলৈ গ্রন্থাগার জংশনে ডন বসকোর মূর্তি বসানো হয়।

কিন্তু, শহরের বিভিন্ন সংগঠন এতে আপত্তি তুলেছিল। বলা হয়, যে স্থানে রাজ্যের বীর শহীদ, কবি, সাহিত্যিকদের মূর্তি বসানো হয়েছে, সেখানে এক জন বহিরাগত ধর্মপ্রচারকের মূর্তি বসানো ঠিক নয়। প্রাক্তন বিধায়ক তথা সমাজসেবী অজয় দত্ত বলেন, ‘‘ডন বসকো শিক্ষাবিদ ছিলেন ঠিকই, কিন্তু, অসমের ইতিহাসে তাঁর অবদান কোথায়? লক্ষ-লক্ষ টাকা দিতে না পারলে ডন বসকো স্কুলে ভর্তি হওয়া যায় না।’’ তাঁর বক্তব্য— মাইল্স ব্রনসন, হেনরি কটনের মতো মানুষ অসমের জন্য অনেক অবদান রেখেছেন, যা ডন বসকোর ক্ষেত্রে খাটে না। বিভিন্ন সংগঠন অভিযোগ তোলে, দীর্ঘদিন ধরে ব্রহ্মপুত্রের বুকে জাতীয় বীর লাচিত বরফুকনের মূর্তি বসানোর কথা। কিন্তু সরকারি গড়িমসিতে তা এখনও হয়নি। অভিযোগ তোলা হয়, বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘুদের তুষ্ট করতেই এই স্থানে তড়িঘড়ি ডন বসকোর মূর্তি গড়ার অনুমতি দেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। তাঁরই আজ ওই মূর্তি উন্মোচন করার কথা ছিল। প্রতিবাদের জেরে ভরলুর তীরে ওই জায়গায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

Advertisement

কিন্তু, আজ সকাল ৬টা নাগাদ হঠাৎই অনেক আন্দোলনকারী মূর্তির সামনে জড়ো হয়। রীতিমতো প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল তারা। মোতায়েন থাকা পুলিশকর্মীরা তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে দু’পক্ষে হাতাহাতি হয়। চার পুলিশকর্মী জখম হন। এর পর, ডন বসকোর মূর্তি বেদি থেকে উপড়ে জলে ফেলে দেওয়া হয়। পরে বড় পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। মূর্তিটি জল থেকে তুলে ট্রাকে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে দিঘলীপুখুরির পাড়ে এই মূর্তি বসানোর কথা থাকলেও প্রতিবাদের জেরে স্থানবদল করা হয়েছিল। মূর্তি উদ্বোধনের অনুষ্ঠান বাতিল হয়ে যায়।

ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী জেলাশাসককে তদন্তের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয় মানুষের আবেগ থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু, শিক্ষাক্ষেত্রে ও সমাজে সেন্ট জন বসকোর অবদানও স্বীকার করতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন