ক্ষতিগ্রস্ত: বেলাইন দিল্লির ম্যাজেন্টা লাইনের মেট্রোর সেই ট্রেন। ছবি: ইউটিউব।
উদ্বোধনের আগেই বেলাইন হয়ে গেল দিল্লির ম্যাজেন্টা লাইনের মেট্রোর চালকবিহীন একটি ট্রেন। মঙ্গলবার বেলা ৩টে ৪০ নাগাদ চালকহীন ওই আধুনিক ট্রেনটির রক্ষণাবেক্ষণ কাজ চলার সময়ে সেটি গিয়ে ধাক্কা মারে কালিন্দী কুঞ্জ মেট্রো ডিপো-র দেওয়ালে। দেওয়াল ভেঙে যায়। খুলে গিয়েছে ট্রেনের সামনের অংশ। ফলে প্রশ্ন উঠেছে চালকবিহীন ওই ট্রেনের প্রযুক্তি নিয়ে।
নয়ডা এবং দক্ষিণ দিল্লির মধ্যে যাতায়াতের সময় কমানোর জন্য কালকাজি মন্দির-বটানিক্যাল গার্ডেন লাইন বানিয়েছেন দিল্লি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। বড়দিনে সেই লাইনটি উদ্বোধন করার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। দুর্ঘটনার পরে সেই অনুষ্ঠান আদৌ সম্ভব হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। দিল্লি মেট্রোর মুখপাত্র অনুজ দয়াল জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর কোনও কারণ নেই। কারও কোনও ক্ষতি হয়নি। কালিন্দী কুঞ্জ ডিপোয় ওই চালকবিহীন ট্রেনটির রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছিল। তখন ওই ঘটনাটি ঘটে। কী ভাবে ঘটল তা খতিয়ে দেখতে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে দিল্লি মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওয়ার্কশপে ওই ট্রেনটির রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলায় ট্রেনটির ব্রেক খুলে রাখা হয়েছিল। কিন্তু কাজের শেষে সেই ব্রেক লাগাতে ভুলে যান সংশ্লিষ্ট কর্মীরা। এরপর ট্রেনটিকে ধোওয়ার জন্য র্যাম্পে চড়ানো হলে, ব্রেক না থাকায় সেটি গড়িয়ে গিয়ে দেওয়ালে ধাক্কা মারে। প্রাথমিক ভাবে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের ভুলে ওই ঘটনা ঘটেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
দিল্লি মেট্রোর বটানিক্যাল গার্ডেন-জনকপুরি ওয়েস্ট-এ (ম্যাজেন্টা লাইন) ১২.৬৪ কিলোমিটারের পথ খতিয়ে দেখে গত মাসেই সুরক্ষা-শংসাপত্র দেয় কমিশনার ফর মেট্রো রেল সেফটি (সিএমআরএস)। মেট্রোর আধুনিক ট্রেন চালক ছাড়াই চলতে পারে। দিল্লির এই অংশে ট্রেনগুলি ‘কমিউনিকেশন বেসড ট্রেন কন্ট্রোল’ সিগন্যাল প্রযুক্তির মাধ্যমে চলাচল করবে। আজকের দুর্ঘটনার পরে ওই প্রযুক্তি নিরাপদ কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনুজের অবশ্য দাবি, ‘‘দুর্ঘটনার সঙ্গে সিগন্যাল প্রযুক্তির কোনও সম্পর্ক নেই।’’
ম্যাজেন্টা লাইনে এমন দুর্ঘটনা অবশ্য এই প্রথম নয়। কালিন্দী কুঞ্জ ডিপোতেই গত বছর ৫ নভেম্বর দু’টি ট্রেনের ধাক্কা লেগেছিল। আধুনিক ‘অ্যান্টি কলিশন’ প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও ডিপোর আট নম্বর লাইনে ওই ঘটনা ঘটেছিল। সে বারও কারও আঘাত লাগেনি। এ বারের মতোই ট্রেন দু’টির
ক্ষতি হয়েছিল।