সফদরজঙ্গের মাতৃমন্দিরের মণ্ডপের প্রস্তুতি। —নিজস্ব চিত্র
শ্রীভূমিকেও টেক্কা দিয়েছে দিল্লি।
ষষ্ঠীতে পা না-দিলে যে রাজধানীতে পুজোর আমেজ বোঝা কঠিন, সেই দিল্লির সব হিসেব ওলটপালট করে দিয়েছে সফদরজঙ্গ এনক্লেভের মাতৃমন্দির পুজো কমিটি। এ বছর মহালয়ারও আগে পুজো উদ্বোধন দেখেছে কলকাতা শহরতলি। আর রাজধানীতে মহালয়া তো দূর, গত ২১ সেপ্টেম্বরের সন্ধ্যা থেকেই মাতৃমন্দিরের পুজো প্রাঙ্গনে শুরু হয়ে গিয়েছে দুর্গাপুজো উপলক্ষে নানা ধরনের প্রতিযোগিতা, জমজমাট আড্ডা, খাওয়ার আসর। যা চলবে একেবারে নবমী পর্যন্ত। এক মাস ধরে হয়ে চলা ওই অনুষ্ঠান-প্রতিযোগিতায় স্থানীয় কচিকাঁচারা তো বটেই, পাড়ার দাদা-বৌদিরাও সন্ধে হলেই নেমে পড়ছেন সঙ্গীত থেকে শঙ্খধ্বনির লড়াইতে।
বিশাল চাতালের এক কোণে তখন ধীরে ধীরে প্রস্তুত হচ্ছেন মা দুর্গা। মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে রাজস্থানের মাউন্ট আবুর দিলওয়ারা মন্দিরের আদলে। মাতৃমূর্তি ও পুজো প্রাঙ্গনটিকে মন্দিরের আদলে গড়ে তোলার জন্য গত এক মাস ধরে পড়ে রয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের শিল্পীরা। পুজো কমিটির সদস্য শুভজিৎ দত্ত বলেন, ‘‘আমাদের এটি ৫২তম বর্ষ। দিল্লির অন্যতম পুরনো পুজো। মন্দির ও প্রতিমা দেখা ছাড়াও এখানে ভোগ খেতে পুজোয় প্রত্যেক দিন ৫ থেকে ৭ হাজার লোক আসেন।’’
অন্য দিকে থিমের বাহুল্যে না হেঁটে, দিল্লির পটেলনগর পুজো কমিটিতে মাতৃশক্তির আরাধনার সব দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন স্থানীয় মহিলারা। পুজো কমিটির সম্পাদক শেলি ভৌমিক বললেন, ‘‘স্থানীয় মহিলারাই এ বার দায়িত্ব নিতে এগিয়ে এসেছেন। নারীরা যে কোনও ভাবেই পুরুষদের থেকে কম নন, পুজোর মাধ্যমে সেই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।’’ নারীশক্তির উদ্যাপনের পাশাপাশি দিল্লির বুকে বাঙালি সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখতেও বদ্ধপরিকর পুজো কমিটির সদস্যা সুচন্দা সেন, কবিতা দত্তরা। তাই পুজোর ক’দিন বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও পুজো কমিটির সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় বাঙালি পরিবারগুলির জন্য রাখা হয়েছে পোশাকবিধি। বিশেষ করে অষ্টমী ও নবমীতে পুরুষদের ধুতি-পাঞ্জাবি আর মহিলাদের শাড়ি পরা বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে ভাবছে পুজো কমিটি।