গোরক্ষায় বাড়াবাড়ির বিপদ নিয়ে হুঁশিয়ারি

গত মে মাসে কেন্দ্রীয় সরকার নতুন নিয়ম করে হাটেবাজারে জবাইয়ের জন্য গরু-মোষ কেনাবেচা বন্ধ করেছে। বিরোধীরা বলছেন, এতে গোরক্ষকদেরই সুবিধা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৭ ০৩:০৪
Share:

গত কালই হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে একটি সরকারি গোশালায় প্রায় ৩৫টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।

উত্তরপ্রদেশের দাদরি থেকে রাজস্থানের অলওয়র, হরিয়ানার বল্লভগড় থেকে ঝাড়খণ্ডের রামগড়— গোরক্ষার নামে একের পর এক হামলা, মানুষ খুন দেখেছে এ দেশ। গত মে মাসে কেন্দ্রীয় সরকার নতুন নিয়ম করে হাটেবাজারে জবাইয়ের জন্য গরু-মোষ কেনাবেচা বন্ধ করেছে। বিরোধীরা বলছেন, এতে গোরক্ষকদেরই সুবিধা হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী মুখে গোরক্ষকদের বিরুদ্ধে কথা বললেও, তাঁর সরকারই গোরক্ষক বাহিনীকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। পাশাপাশি গোরক্ষায় বাড়াবাড়ি দেশের অর্থনীতির উপরেও চাপ বাড়াবে বলে সতর্ক করছেন অর্থনীতিবিদেরা। তাঁদের প্রশ্ন, এই সরকার যদি গরু-মোষ জবাই একেবারেই বন্ধ করতে চায়, তা হলে দুধ দিতে বা চাষের কজে অক্ষম গবাদি পশুর কী হবে?

Advertisement

অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য, চাষি বা পশুপালকদের ঋণের বোঝা এতে বাড়বে। সরকারের পক্ষেও গোশালা তৈরি করে এত গরু-মোষের দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব নয়। এই যুক্তির সপক্ষে প্রমাণও মিলেছে। গত কালই হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে সরকারি গোশালায় প্রায় ৩৫টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। প্রবল বৃষ্টিতে ওই এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। খাবারও পাচ্ছিল না গরুগুলি। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক বিকাশ রাওয়াল বললেন, ‘‘বছরে ৩.৭ কোটি ষাঁড় ও মোষের জন্ম হয়। জবাই বন্ধ করে তাদের গড় আয়ুর থেকে ৮ বছর বেশি বাঁচিয়ে রাখা হলে অল্প সময়েই দেশে এদের সংখ্যা ২৭ কোটিতে পৌঁছবে। এদের জন্য গোশালা তৈরি করতে প্রায় ৫ লক্ষ একর জমি লাগবে। খরচ হবে ১০ লক্ষ কোটি টাকা। বছরে এদের খাবারের পিছনে খরচ হবে ৫.৪ লক্ষ কোটি টাকা।’’ রাওয়ালের তাই প্রশ্ন, ‘‘এই পরিমাণ অর্থ কি সরকারের পক্ষে খরচ করা সম্ভব হবে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন