চোক্সীর সম্পত্তি অ্যাটাচ কলকাতায়

ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, নিউ টাউনের অ্যাক্সিস মলের একটি গোটা ব্লক রয়েছে মেহুল চোক্সীর নামে। সেখানে ‘গীতাঞ্জলি’-র দোকান ছাড়া অন্য সামগ্রীর দোকানও রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৮ ০২:৫১
Share:

মেহুল চোক্সী। —ফাইল চিত্র।

কলকাতায় মেহুল চোক্সীর সম্পত্তি ‘অ্যাটাচ’ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।

Advertisement

ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, নিউ টাউনের অ্যাক্সিস মলের একটি গোটা ব্লক রয়েছে মেহুল চোক্সীর নামে। সেখানে ‘গীতাঞ্জলি’-র দোকান ছাড়া অন্য সামগ্রীর দোকানও রয়েছে। ওই ব্লকটিকেই হোলির দিন খাতায় কলমে অ্যাটাচ করা হয়েছে বলে ইডি কর্তারা জানিয়েছেন। পুরো কাজটাই করেছে মুম্বই ইডি। কলকাতার অফিসারেরা তাঁদের সাহায্য করছেন। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, সারা দেশেই এ ভাবে অ্যাটাচ করা হচ্ছে নীরব মোদী এবং মেহুল চোক্সীর সম্পত্তি।

ইডি-র এক কর্তা জানিয়েছেন, অ্যাটাচ করা মানেই তা বাজেয়াপ্ত করা নয়। এটি বাজেয়াপ্ত করার প্রথম ধাপ। ইডি কোনও মামলায় কোনও সম্পত্তি অ্যাটাচ করার পরে তা দিল্লিতে নিজেদের আইনি দফতরকে পাঠায়। আইনি দফতর সব খতিয়ে দেখে সবুজ সঙ্কেত দিলে তবে তা বাজেয়াপ্ত বা ‘ক্রোক’ করা হয়। সে কথা আদালতকেও জানাতে হয়। মেহুল চোক্সীর কলকাতার সম্পত্তির ক্ষেত্রেও সেটিই করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, অ্যাটাচ বা বাজেয়াপ্ত করা হলেও অনেক ক্ষেত্রেই সেখানে বাণিজ্যিক বা অন্য ধরনের কার্যকলাপ চালু থাকলে তা বন্ধ করা হয় না। ইডি সূত্রের খবর, অ্যাক্সিস মলের ওই ব্লকটি অ্যাটাচ করা হলেও তাই সেখানকার দোকানগুলি খোলা থাকবে। উদাহরণ দিয়ে এক অফিসার জানিয়েছেন, শিলিগুড়িতে সারদার সম্পত্তি হিসেবে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল এ ভাবে বাজেয়াপ্ত করার পরেও সেটি এখনও নিয়মিত চলছে।

Advertisement

মেহুলের আর্থিক দূর্নীতি সংক্রান্ত খবর আসার পর থেকেই কলকাতায় সক্রিয় হয়ে ওঠে ইডি। নেট ঘেঁটে কলকাতায় মেহুলের ‘গীতাঞ্জলি’-র নিজস্ব তিনটি শো-রুমের হদিশ পাওয়া যায়। কিন্তু, হানা দিয়ে জানা যায় তিনটি শো-রুমই কিছু দিন ধরে বন্ধ। ইডি অফিসারদের একাংশের কথায়, নিজেদের শো-রুম বন্ধ করে ‘ফ্র্যাঞ্চাইজি’ ব্যবসা শুরু করেন মেহুল। কলকাতার সাতটি জায়গা ও দুর্গাপুরেও ‘গীতাঞ্জলি’-র এক ফ্র্যাঞ্চাইজির দোকানে হানা দেয় ইডি। কলকাতা থেকে মেহুলের ২০ কোটি টাকার গয়না বাজেয়াপ্ত করে ইডি। বাজেয়াপ্ত করা হয় সোনা এবং প্ল্যাটিনামের উপরে হীরে বসানো দুল, হার, আংটি ও বালা। রয়েছে হীরে বসানো ঘড়িও। এ সমস্ত বাজেয়াপ্ত করে ব্যাঙ্কের লকারে রেখে দেয় ইডি।

বড় ধরনের আর্থিক দুর্নীতিতে অভিযুক্তের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ইডি। এর আগে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার মামলায় সারদা, রোজ ভ্যালি মতো কিছু সংস্থার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। উদ্দেশ্য, বাজেয়াপ্ত সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে পাওনাদের টাকা ফেরানো। সারদার ক্ষেত্রে পাওনাদার সাধারণ আমানতকারী হলেও মেহুল চোক্সীর ক্ষেত্রে পঞ্জাব ন্যশনাল ব্যাঙ্ক। পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (পিএনবি) মুম্বইয়ের ব্র্যাডি হাউস শাখায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রতি বছর অডিট করত বলে জানিয়েছেন পিএনবি কর্তৃপক্ষ। ঝুঁকির বিষয়টি দেখাই ওই অডিটের উদ্দেশ্য। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ব্র্যাডি হাউস শাখায় অডিট করত না বলে যে খবর বেরিয়েছে, তা ঠিক নয় বলে দাবি করেছেন পিএনবি কর্তৃপক্ষ। এ দিনই ব্র্যাডি হাউস শাখার প্রাক্তন মুখ্য অডিটর বিষ্ণুব্রত মিশ্রকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন