ইডি-র নজরে এ বার লালুর মেয়ে মিসাও

শুক্রবার সিবিআই-এর পরে শনিবার ইডি। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন লালুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় সিবিআই তাঁর ছেলে, বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবকেও জড়িয়ে নিয়েছে। এ বার ইডি লালুর মেয়ে, রাজ্যসভা সাংসদ মিসা ভারতী ও জামাই শৈলেশ কুমারের বিরুদ্ধে মাঠে নামল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৭ ০৩:২০
Share:

মিসা ভারতী। —ফাইল চিত্র।

লালুপ্রসাদের উপরে চাপ আরও বাড়ল।

Advertisement

শুক্রবার সিবিআই-এর পরে শনিবার ইডি। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন লালুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় সিবিআই তাঁর ছেলে, বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবকেও জড়িয়ে নিয়েছে। এ বার ইডি লালুর মেয়ে, রাজ্যসভা সাংসদ মিসা ভারতী ও জামাই শৈলেশ কুমারের বিরুদ্ধে মাঠে নামল।

আজ সকাল থেকে দিল্লির তিনটি ফার্ম হাউসে হানা দেন ইডি-র অফিসাররা। মিসা ও শৈলেশের বিরুদ্ধে আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে সকাল ন’টা থেকে সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত ঘিটরোনি, বিজ্বসন ও সৈনিক ফার্মস-এর তিনটি ফার্ম হাউসে তল্লাশি
চলে। ঘিটরোনির ফার্মহাউসে মিসা নিজেই হাজির ছিলেন। তাঁর স্বামী শৈলেশকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সৈনিক ফার্মসের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। ইডি অফিসাররা জানিয়েছেন, বিভিন্ন ধরনের নথি, আইপ্যাড, ল্যাপটপ, মোবাইল আটক করা হয়েছে। মিসা-শৈলেশের মোবাইলও আটক করা হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: অভিযানের ছক উপেন-সেনাপতির

লালুর মেয়ে-জামাইয়ের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ? সরকারি সূত্রের দাবি, আজকের তল্লাশি একটি নির্দিষ্ট আর্থিক নয়ছয়ের মামলার ভিত্তিতে হলেও আসলে সিবিআই ও ইডি-র তদন্ত একই সূত্রে বাঁধা রয়েছে। সিবিআই তদন্ত করছে, রেলমন্ত্রী হিসেবে লালু কী কী দুর্নীতি করেছেন, কোথায়, কাকে কী সুবিধে পাইয়ে দিয়ে তার বিনিময়ে কী ঘুষ আদায় করেছেন তা নিয়ে। সেইসঙ্গে ইডি দেখছে, লালুর সেই টাকা তাঁর ছেলেমেয়েরা কোথায় কী ভাবে কাজে লাগিয়েছেন।

তৎপর: মিসা ভারতীর ফার্ম হাউসে তল্লাশির সময় বাইরে এক ইডি কর্তা। শনিবার দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

ইডি-র অভিযোগ, ‘মিশেইল প্রিন্টার্স অ্যান্ড প্যাকার্স’ নামের একটি সংস্থার অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতেই লালুর মেয়ে-জামাইয়ের বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে। মিসা ও শৈলেশ, দু’জনেই ওই সংস্থার ডিরেক্টর। সংস্থাটি প্রথম নথিভুক্ত হয় ২৫ নম্বর তুঘলক রোডের ঠিকানায়। সাংসদ ও রেলমন্ত্রী হিসেবে দীর্ঘ দিন এই বাড়িটিই ছিল লালুর সরকারি ঠিকানা। ২০০২ সালে মাত্র ১ লক্ষ টাকা লগ্নি করে ‘মিশেইল প্রিন্টার্স’ সংস্থাটি চালু করেন মিসা। ওই সংস্থারই ১ লক্ষ ২০ হাজার শেয়ার ১০০ টাকা দরে চারটি ভুঁইফোঁড় সংস্থাকে বিক্রি করেন মিসা। তখন ওই সব শেয়ারের দাম ছিল ১০ টাকা। কয়েক মাস পরে আবার সেই ১০ টাকা দরেই সব শেয়ার কিনে নেন মিসা। বীরেন্দ্র ও সুরেন্দ্র জৈন নামে ওইসব ভুঁইফোঁড় সংস্থার মালিকদের আগেই গ্রেফতার করেছে ইডি। মিসার চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট রাজেশ অগ্রবালকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

ইডি-র অভিযোগ, এই শেয়ারের হাত বদলের ফলে মিসার প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা লাভ হয়। সেই টাকা কাজে লাগিয়ে তিনি ১ কোটি ৪১ লক্ষ টাকায় বিজ্বসনের ফার্মহাউস কেনেন। কিন্তু ওই ফার্মহাউসের আসল দাম ছিল ৫০ কোটি টাকা। মিশেইল প্রিন্টার্সের ঠিকানাও তুঘলক রোড থেকে বিজ্বসনে চলে আসে। ইডি-র অভিযোগ, জৈনরা প্রায় ৮ হাজার কোটির কালো টাকা সাদা করেছেন বলে অভিযোগ। সেখানেও মিসার যোগাযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মিসা-শৈলেশকে ফের জেরার জন্য ডাকা হবে। আরও কিছু জায়গায় তল্লাশিও চালাবে ইডি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন