ঋণের জাল আরও বিশাল

কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের তথ্য বলছে গীতাঞ্জলি ছাড়াও মেহুলের ‘নক্ষত্র ওয়ার্ল্ড লিমিটেডে’র ঋণের পরিমাণ প্রায় ৪৪৩ কোটি টাকা। এ ছাড়া, নীরব মোদীর ‘রাদাশির জুয়েলারি কোম্পানি লিমিটেড’ বিভিন্ন ব্যাঙ্কের থেকে ৩৫২১ কোটি টাকারও বেশি ঋণ নিয়েছে।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৩
Share:

মেহুল চোক্সী।

শুধু পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারিই নয়, মেহুল চোক্সীর ‘গীতাঞ্জলি জেমস লিমিটেডে’র কাছে ২৭টি রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্কের পাওনা ১৪ হাজার ২৬৪ কোটি ২২ লক্ষ ৮৫ হাজার ৬৭৩ টাকা। কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের তথ্য বলছে গীতাঞ্জলি ছাড়াও মেহুলের ‘নক্ষত্র ওয়ার্ল্ড লিমিটেডে’র ঋণের পরিমাণ প্রায় ৪৪৩ কোটি টাকা। এ ছাড়া, নীরব মোদীর ‘রাদাশির জুয়েলারি কোম্পানি লিমিটেড’ বিভিন্ন ব্যাঙ্কের থেকে ৩৫২১ কোটি টাকারও বেশি ঋণ নিয়েছে। তাঁরই ‘ফায়ারস্টার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড’-এর ঋণ ৩৭২৬ কোটি টাকা। সমপরিমাণ ঋণ ‘ফায়ারস্টার ডায়মন্ড ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড’-এরও।

Advertisement

মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ‘বুক-ডেট’ দেখিয়ে ঋণ নিয়েছিলেন মেহুল। যার অর্থ, মেহুল ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে বাজার থেকে প্রাপ্ত টাকা ব্যাঙ্কের কাছে চলে যাবে। ঋণ পাওয়ার জন্য অস্থাবর সম্পত্তিও ব্যাঙ্কগুলিকে দেখিয়েছিলেন মেহুল। তাৎপর্যপূর্ণ, প্রতিটা ক্ষেত্রে তাঁর দেখানো অস্থাবর সম্পত্তি সরকারি নথিতে ‘নট বিইং প্লেজ’ হিসাবে ছিল। এর অর্থ কী?

এক কর্পোরেট বিশেষজ্ঞর ব্যাখ্যা, ‘‘ঋণ শোধ করতে না পারলে ওই সব সম্পত্তি সরাসরি বিক্রি করে ঋণের টাকা উসুল করার ক্ষমতা নেই ব্যাঙ্কগুলির। অর্থাৎ, মেহুল অস্থাবর সম্পত্তি ব্যাঙ্ককে দেখালেন, কিন্তু তার পজেশন দিলেন না।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: মৃত্যুতে নীরব স্বস্তি!

‘সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিস’-এর নীরব-তদন্তের তালিকায় রয়েছে ১০৭টি কোম্পানি। মন্ত্রকের সন্দেহ, কোম্পানিগুলি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত। উল্লিখিত পাঁচটি কোম্পানি ছাড়া বাকি ১০২টি কোম্পানির আরও কয়েক হাজার কোটি টাকা ঋণ থাকতে পারে বলে আশঙ্কা। নীরব এবং মেহুল বিদেশ থেকেই জানিয়েছেন, তাঁদের পক্ষে ঋণ শোধ করা আর সম্ভব নয়। রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাঙ্কের এক কর্তার কথায়, ‘‘টাকা না পেলে এফআইআর করা হয়। তার পরে আর্থিক দুর্নীতির তদন্তকারী সংস্থাগুলি অনুসন্ধান শুরু করে। বিষয়টা সময়সাপেক্ষ।’’

তবে, ২০০৭ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ৬১৩৯ কোটি টাকার বেশি ঋণ শোধ করেছে গীতাঞ্জলি। ২০০৯ থেকে ২০১৬-এর মধ্যে ফায়ারস্টার ইন্টারন্যাশনালের ঋণ শোধের পরিমাণ প্রায় ৪৩৯৩ কোটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন