বারবার সমন পাঠালেও তিনি হাজির হচ্ছেন না। তাই ব্যাঙ্ক ঋণ জালিয়াতির মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এ বার বিজয় মাল্যর পাসপোর্ট বাতিল করতে উদ্যোগী হল। ইডি সূত্রের খবর, ইউবি গোষ্ঠীর চেয়ারম্যানের পাসপোর্ট বাতিল করার জন্য দিল্লির পাসপোর্ট অফিস তথা বিদেশ মন্ত্রকের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আইডিবিআই ব্যাঙ্ক থেকে মাল্যর কিংফিশার এয়ারলাইন্স ৯৫০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল। ঋণ শোধ হয়নি। সেই অর্থ বিদেশে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে ইডি সূত্রের খবর। আর্থিক নয়ছয় দমন আইনে মামলা করে ইডি-র তদন্ত শুরু হতেই দেশ ছাড়েন মাল্য। ইডি-কর্তাদের সন্দেহ, তিনি এখন ব্রিটেনেই রয়েছেন। ইতিমধ্যে তিন বার তাঁকে সমন পাঠানো হয়েছে। শেষ সমনে ৯ এপ্রিলের মধ্যে মাল্যকে তদন্তকারীদের সামনে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মাল্য মে মাস পর্যন্ত সময় চেয়েছেন।
নিয়ম অনুযায়ী, পাসপোর্ট বাতিল হওয়ার পর বিদেশ মন্ত্রকের তরফে তা ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। একই সঙ্গে তাঁকে প্রত্যর্পণের জন্যও অনুরোধ করা হবে। সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই মাল্যর ফিরে আসার বিষয়ে স্পষ্ট করে জানতে চেয়েছে ইউবি গোষ্ঠীর থেকে। ইডি-র বক্তব্য, ইউবি সংস্থাটির তরফে বলা হচ্ছে, তাঁদের কর্তারা তদন্তে সাহায্য করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে মাল্যকেই তদন্তে যোগ দিতে হবে। পাসপোর্ট বাতিল হওয়ার পর প্রয়োজনে মাল্যর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্যও আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে ইডি।
ইডি-র পাশাপাশি সিবিআইও আইডিবিআই ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণ জালিয়াতির তদন্ত করছে। সিবিআই সূত্রের বক্তব্য, ওই আর্থিক লেনদেনের তথ্য জানানোর জন্য ব্রিটেন, আমেরিকা, ফ্রান্স, হংকং ও সুইৎজারল্যান্ড সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে। ইডি-র মতো সিবিআইয়েরও সন্দেহ, ওই ঋণের টাকার বেশির ভাগটাই বিমানের যন্ত্রাংশ কেনার নামে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংস্থার লন্ডনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও কিছু অর্থ জমা পড়েছে। তদন্তে তাই বিদেশের সাহায্য পাওয়াটা জরুরি।
আইডিবিআই ছাড়াও বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক মিলিত ভাবে মাল্যর সংস্থাকে যে ৬,১০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিল, সে বিষয়েও তদন্ত করছে সিবিআই ও ইডি। প্রাথমিক তদন্তে জানা যাচ্ছে, ঋণ হিসেবে পাওয়া মোট ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি ভাগটাই বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ জন্য আর্থিক লেনদেন হয়েছে প্রায় তিন লক্ষ বার।