তামিল রাজনীতিতে বড়সড় ধাক্কা খাওয়ার পরে এ বার বিশ্বাসঘাতকতার তত্ত্বকে সামনে এনেই বিপর্যয় সামলাতে নামল শাসক দল এডিএমকে। টিটিভি দিনকরনের নয় জন অনুগামীকে দল থেকে বহিষ্কার করলেন মুখ্যমন্ত্রী ই পলানীস্বামী। একই সঙ্গে এডিএমকের দাবি, জয়ললিতার কেন্দ্রে তাদের হারের পিছনে রয়েছে দিনকরণ ও ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিনের চক্রান্ত। প্রয়াত নেত্রীকে অপমান করতেই তাঁর কেন্দ্রে পর্দার আড়ালে হাত ধরেছেন ওই দু’জন।
আর কে নগর-এ নির্দল প্রার্থী দিনকরন দলের প্রতীক না পেয়ে জয়ললিতার ছবিকে সামনে রেখেই ভোটে লড়েছিলেন। জিতেছেন ৪০ হাজারের বেশি ভোটে, যা ওই কেন্দ্রে গত বছর জয়ী হওয়া জয়ললিতার ভোটের ব্যবধানের থেকেও বেশি। বিরাট সাফল্যের পরে শশিকলার ভাইপো তাই নিজেকে নেত্রীর প্রকৃত উত্তরাধিকারী হিসেবে তুলে ধরছেন। এই বিপদের সামনেই মুখ্যমন্ত্রী ই পলানীস্বামী ও এডিএমকে-র শীর্ষ নেতা ও পনীরসেলভম আজ দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানেই দিনকরন অনুগামীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। যাঁদের আজ দল থেকে বের করে দেওয়া হল, তাঁদের মধ্যে পি ভেট্রিভেল, এন জি পার্থিবান, এম রেঙ্গাস্বামী, থঙ্গাতামিলসেলভম, ভি পি কলাইরাজন ও ভি মুথাইয়ার মতো নেতারা ছয়টি জেলায় দলের সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া, এডিএমকে-র কর্নাটক শাখার প্রধান ও দুই জন মুখপাত্রকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত নেতাদের মধ্যে এমন কয়েক জন রয়েছেন, যাঁরা বিধায়ক হিসেবে দিনকরনের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। পলানী ও পনীর শিবিরের মিলনের পরেও তামিলনাড়ুর ১৮ জন বিধায়ক শশিকলা-দিনকরনকে ছাড়েননি। স্পিকার যদিও আগেই তাঁদের বিধানসভা থেকে বরখাস্ত করেছেন। শাস্তির সিদ্ধান্ত জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পলানীস্বামী আজ বলেন, ‘‘বিশ্বাসঘাতকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল। দিনকরনকে দল থেকে বের করে দেওয়ার পরেও এঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়নি। ভেবেছিলাম, এঁরা নিজেদের বদলাবেন। কিন্তু এই নেতারা এত টুকুও পাল্টাননি।’’
পনীরসেলভম দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে মন্তব্য করেন, ‘‘রাজনীতিতে উত্থানপতন রয়েছে ঠিকই তবে দিনকরন দলের একটা ইটও খসাতে পারবেন না।’’ তবে জয়ললিতার কেন্দ্রে মানুষের রায় পক্ষে যাওয়ায় এডিএমকে-র অনেকেই এখন দিনকরনের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে তাঁর শিবিরের নেতারা দাবি করছেন। কিছু দিনের মধ্যেই পনীর-পলানীর ঘর ভাঙতে চলেছে বলে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন শশী শিবিরের নেতারা।
বিরোধী ডিএমকে অবশ্য দিনকরনের সাফল্যের পিছনে তাদের হাত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আর কে নগর কেন্দ্রে ডিএমকে প্রার্থী তৃতীয় স্থানে থাকলেও এ বার তাঁর জামানত জব্দ হয়েছে। একে সামনে রেখেই দিনকরনের সঙ্গে স্ট্যালিনের কৌশলগত সমঝোতার অভিযোগ উঠেছে। তবে এ দিন করুণানিধির দলের তরফে দাবি করা হয়েছে, ভোটে টাকা ছড়াতে দিনকরনকে সাহায্য করেছিলেন রাজ্যেরই মন্ত্রীরা।