Elon Musk Donald Trump

ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠের ভারতবিরোধী পোস্টে কেন যেচে জবাব দিল এক্স? কী ভাবে ‘সত্যানুসন্ধান’? অবশেষে মুখ খুললেন মাস্ক

ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ পিটার নাভারোর ভারতবিরোধী অবস্থানের বিরুদ্ধে যুক্তি সাজিয়ে তুলেছিল এক্স। যার জন্য পিটার সরাসরি ইলন মাস্ককে দুষেছিলেন। এ বার তা নিয়ে মুখ খুললেন মাস্ক নিজে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:০৪
Share:

আমেরিকার ধনকুবের তথা এক্স-এর মালিক ইলন মাস্ক। —ফাইল চিত্র।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরামর্শদাতা পিটার নাভারোর পোস্টের নীচে একাধিক মন্তব্য করা হয়েছিল এক্স-এর তরফে। পিটারের ভারতবিরোধী অবস্থানের বিরুদ্ধে যুক্তি সাজিয়ে তুলে ধরা হয়েছিল। স্পষ্ট করা হয়েছিল আমেরিকার ‘ভণ্ডামি’ও। এক্স-এর মালিক তথা মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক অবশেষে তা নিয়ে মুখ খুললেন। পিটারের নাম না করেই তাঁর আক্রমণের জবাব দিলেন। জানিয়ে দিলেন, তাঁর প্ল্যাটফর্মের তরফে যে কোনও পোস্টের নীচেই এই ধরনের মন্তব্য করা হয়। সকলের ভুল শুধরে দেওয়া হয় এ ভাবেই।

Advertisement

নিজের এক্স হ্যান্ডলে মাস্ক লিখেছেন, ‘‘এই প্ল্যাটফর্মে কী ভাবে কথাবার্তা চলবে, তা নির্ধারণ করে দেয় জনগণই। আমরা সব পক্ষের কথা শুনি। আমাদের ‘কমিউনিটি নোট’ সকলের ভুল শুধরে দেয়। এ ক্ষেত্রে কোনও ব্যতিক্রম নেই। আমাদের সব তথ্য এবং সঙ্কেতের উৎস সর্বজনীন। তার উপরে সত্যানুসন্ধান হয় গ্রোক-এর মাধ্যমে।’’ উল্লেখ্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় নির্মিত সত্যানুসন্ধানের মাধ্যম গ্রোক। এখানে গুগ্‌লের মতো যে কোনও বিষয় ‘সার্চ’ করে তা সম্পর্কের নিশ্চিত হওয়া যায়।

দু’দিন আগে ট্রাম্পের পরামর্শদাতা নিজের এক্স হ্যান্ডলে রাশিয়া-ইউক্রেনর যুদ্ধের জন্য ভারতকে দুষে একটি পোস্ট করেছিলেন। সেখান থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। পিটার দাবি করেছিলেন, ভারত শুধু নিজের লাভের কথা ভেবে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনে চলেছে। এতে ইউক্রেনের বহু মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। রাশিয়া যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ভারতের এই অর্থসাহায্যের কারণেই। আবার, ভারতের শুল্কের কারণে বহু আমেরিকান চাকরি হারাচ্ছেন বলেও দাবি করেন তিনি। তাঁর এই পোস্টের নীচে এক্স-এর তরফে একটি মন্তব্য করা হয়, যার শিরোনাম— ‘‘পাঠকদের যোগ করা কিছু প্রসঙ্গ, যা মানুষের জানা দরকার’’।

Advertisement

ভারতকে সমর্থন করে এক্স-এর তরফে বলা হয়, ‘‘ভারতের রাশিয়া থেকে তেল কেনার সিদ্ধান্ত জ্বালানি নিরাপত্তার কারণে, শুধু লাভের জন্য নয়। এই সিদ্ধান্ত কোনও বিধিনিষেধ লঙ্ঘনও করে না। ভারত শুল্ক নেয় ঠিকই, তবে পরিষেবার ক্ষেত্রে আমেরিকারও বাণিজ্য উদ্বৃত্ত রয়েছে। তা ছাড়া, আমেরিকা তো রাশিয়ার কাছ থেকে কিছু কিছু জিনিস কিনে থাকে, এটা ভণ্ডামি।’’ এক্স থেকে এমন বার্তা পেয়ে ক্ষুব্ধ হন পিটার। তিনি এর জন্য সরাসরি মাস্ককে দায়ী করেন এবং দ্বিতীয় পোস্টে লেখেন, ‘‘বাহ্‌! মাস্ক আজকাল নিজের বক্তব্য মানুষের পোস্টে ঢুকে প্রচার করছেন! আমার পোস্টের নীচের ওই মন্তব্য জঘন্য। ভারত শুধুমাত্র লাভের জন্যই রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনে। রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার আগে তো ওরা তেল কিনত না। ভারত সরকারের মেরুদণ্ড বেঁকে যাচ্ছে। ইউক্রেনীয়দের নিধন বন্ধ করুন। আমেরিকানদের চাকরি খাওয়া বন্ধ করুন।’’ এ বার পিটারকেই ‘ভণ্ড’ বলে উল্লেখ করে এক্স। লেখা হয়, ‘‘পিটারের দাবি ভণ্ডামি। ভারতের রুশ তেল কেনার সিদ্ধান্ত আইনসম্মত, সার্বভৌম এবং জ্বালানি নিরাপত্তার কারণেই এই তেল কেনা হয়। আন্তর্জাতিক আইন এতে লঙ্ঘিত হয় না। ভারতকে চাপ দিচ্ছে আমেরিকা, আবার তারাই কোটি কোটি টাকা দিয়ে রাশিয়ার ইউরেনিয়াম এবং অন্যান্য জিনিস কিনছে। আমেরিকার দ্বিচারিতা এ ভাবে ফাঁস হয়ে যাচ্ছে।’’

উল্লেখ্য, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার কারণে ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে আমেরিকা। দু’দেশের বাণিজ্য ধাক্কা খেয়েছে। ট্রাম্পের দাবি, ভারতের থেকেই ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অর্থ পাচ্ছে রাশিয়া। এ ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই অবস্থানে অনড় নয়াদিল্লি। তাদের বক্তব্য, আন্তর্জাতিক বাজারদর এবং জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখে বাণিজ্যনীতি স্থির করা হয়। রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় তেল কেনা বন্ধ করা হচ্ছে না, তেমনই বার্তা দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মাস্কের সংস্থা ভারতকে সমর্থন করে ট্রাম্পের ভণ্ড নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement