কুম্ভ-দূষণে মহামারির আশঙ্কা, জানাল আদালত

আদালত জানিয়েছে, মেলার সময়ে যে অস্থায়ী শিবির ও শৌচাগার তৈরি হয়েছিল, গঙ্গা থেকে সেগুলির দূরত্ব মেরেকেটে ১০ মিটারও নয়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা 

প্রয়াগরাজ শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৫০
Share:

প্রতীকী ছবি।

এ বারের কুম্ভকে ইতিহাসের ‘স্বচ্ছতম’ বলে বড়াই করেছিল রাজ্য ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কুম্ভের সাফাই কর্মীদের কাজে ‘তুষ্ট’ হয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও পা ধুইয়ে দিয়েছিলেন তাঁদের। কিন্তু জাতীয় পরিবেশ আদালতের হুঁশিয়ারি, কুম্ভ মেলার সময়ে হওয়া গঙ্গা দূষণের জেরে ইলাহাবাদে মহামারির আশঙ্কা রয়েছে। বর্ষা আসার আগে ব্যবস্থা না নিলে হাতের বাইরে চলে যাবে পরিস্থিতি।

Advertisement

আদালত জানিয়েছে, মেলার সময়ে যে অস্থায়ী শিবির ও শৌচাগার তৈরি হয়েছিল, গঙ্গা থেকে সেগুলির দূরত্ব মেরেকেটে ১০ মিটারও নয়। ৪৯ দিনের মেলায় যে পরিমাণ কঠিন বর্জ্য জমেছে তা বর্ষার আগে সাফ না করলে ডায়েরিয়া, হেপাটাইটিস ও কলেরার মতো রোগ ছড়াবে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব অনুপচন্দ্র পাণ্ডেকে নোটিস পাঠিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি আদর্শ কুমার গয়ালের বেঞ্চ। শুক্রবার আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা মুখ্যসচিবের।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

Advertisement

কুম্ভ শুরু হওয়ার আগেই একটি কমিটি নিয়োগ করেছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। মেলা চলাকালীন গঙ্গা যাতে দূষিত না হয় তা নজরে রাখাই ছিল কমিটির কাজ। তাদের রিপোর্ট বলছে, জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পুণ্যার্থীদের দাপটে দেড় মাস ধরে দূষিত হয়েছে গঙ্গা। কার্যক্ষমতার তুলনায় অনেক বেশি চাপ পড়েছে বর্জ্য মিশ্রিত দূষিত জল পরিশ্রুতকরণ কেন্দ্র ‘রাজপুর সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’-এর উপরে। জিও টিউবের মাধ্যমে ৫০ শতাংশ জল পরিশ্রুত করা সম্ভব হয়েছে। বাকি ৫০ শতাংশ সরাসরি মিশেছে গঙ্গায়। কঠিন বর্জ্য পরিশ্রুত করা হয় উত্তপ্রদেশের বাসবার প্ল্যান্টে। ২০১৮-র সেপ্টেম্বর থেকে কাজ করে না এটি। তা জানা সত্ত্বেও পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে কুম্ভ মেলার সময়ে ১৮ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য পাঠানো হয়েছে এখানে।

আদালত জানিয়েছে, এক বছরের উপরে কাজ না করায় বর্তমানে ৬০ হাজার মেট্রিক টন কঠিন বর্জ্য জমে রয়েছে ওই কেন্দ্রে। অতিরিক্ত পুর কমিশনার অমরেন্দ্র বর্মা জানিয়েছেন, বাসবার প্ল্যান্টে কঠিন বর্জ্য পরিশ্রুত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল একটি বেসরকারি সংস্থাকে। ঠিক মতো কাজ না করায় নোটিস পাঠানো হয়েছে সংস্থাটিকে। রিপোর্টে আরও দাবি, সলোরীর বর্জ্য পরিশ্রুত কেন্দ্রটিও ঠিকমতো কাজ করছে না। নিকাশি নালা থেকে কঠিন বর্জ্য টেনে নেয় যে জিও টিউব, তা কাজ না করায় ৫০ শতাংশ নোংরা জল গঙ্গায় মিশছে।

কুম্ভ মেলার সময়ে জিও টিউব প্রযুক্তির ব্যবহারও কাজে আসেনি বলে অভিযোগ আদালতের। যদিও যে সংস্থাটি কুম্ভের সময়ে জিও টিউব লাগিয়েছিল তারা কমিটির এই রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ করেছে। কমিটির দাবি, মেলার সময়ে ৩৬টি অস্থায়ী পুকুর খোঁড়া হয়েছিল গঙ্গার ধারে যা বোজানো হয়নি। ৪ মার্চ মেলা শেষ হওয়ার পরেও তার অনেকগুলিতে নোংরা জল জমে রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন