মঞ্চে ১৪টি বিরোধী দলের যুব কর্মীরা। হাত ধরে প্রতিবাদে ফেটে পড়ছেন নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে। তারই মাঝে উড়ছে রাফাল। তাতে সওয়ার নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ।
সামনের বিধানসভা ভোটে মায়া-অখিলেশের সঙ্গে কংগ্রেসের এখনই সমঝোতা না হোক, কংগ্রেস-সপা-বাম-এনসিপির মতো বিরোধী দলের যুব নেতা-কর্মীরা কিন্তু আজ একজোট হলেন রাজধানীর পথে। দিল্লির মান্ডি হাউস থেকে মিছিল বেরোল সংসদ মার্গ পর্যন্ত। সংসদের সামনেই হল জনসভা। আর সেখানেই রাফালের কাট আউটে মোদী-শাহের ছবি নিয়ে চলল প্রচার। তাতে যোগ দিলেন কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালাও। বললেন, ‘‘রাফালে ১ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির পর পিছনের এই সংসদ ভবনে বসার অধিকার হারিয়েছে মোদী সরকার। যুবকরা যদি আন্দোলনের প্রথম সারিতে চলে আসে, তা হলে মোদীকে হটাতে আর কোনও বাধা থাকে না।’’
মঞ্চ থেকেই স্লোগান উঠল, ‘মোদী যুবক-বিরোধী’। রাফাল নিয়ে এর আগেই একটি মামলা সুপ্রিম কোর্ট পৌঁছেছে। আজও আইনজীবী বিনীত ঢান্ডা একটি মামলা করেন। অরবিন্দ কেজরীবালের দলের সঞ্জয় সিংহ রাফালের জন্য ‘বিশেষ তদন্তকারী দল’ গঠনের দাবিতে আর একটি মামলা করেন। রাফাল দুর্নীতি নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবি তুলে সিপিএমও আজ ১৪ পাতার একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেছে। রাহুল গাঁধী এত দিন দাবি করে আসছেন। কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের পর সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি আজ বলেন, ‘‘মোদী সরকারের দুর্নীতি ও ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিদের সাহায্য করার বিরুদ্ধে সিপিএম দেশজুড়ে আন্দোলন করবে। রাফাল দুর্নীতিও এ আন্দোলনে তুলে ধরা হবে।’’
রাহুল গাঁধী যখন রাফাল নিয়ে একা নিরন্তর অভিযোগ তুলছিলেন, সেই সময় বিজেপি কটাক্ষ করত বাকি বিরোধী দল কোনও উচ্চবাচ্য করছে না। সম্প্রতি শরদ পওয়ার রাফাল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ‘সন্দেহের ঊর্ধ্বে’ রাখার পর বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ঝাঁপিয়ে পড়ে রাহুলকে আক্রমণ করেন। পরামর্শ দেন, পওয়ার সাহেবের মতোই যেন তিনি দেশের স্বার্থকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখেন। কিন্তু তার পরেই পওয়ার আগের বক্তব্য থেকে অনেকটা সরে আসেন। বিজেপিও এখন বুঝতে পারছে, ধীরে ধীরে বিরাট আকার নিচ্ছে রাফাল বিতর্ক। আজ কংগ্রেস সুকৌশলে ১৪টি বিরোধী দলের যুব মোর্চার মঞ্চে রাফালকে সামিল করে ফেলেছে। ভবিষ্যতে সে সব দলের নেতারাও এই নিয়ে একজোট হয়ে হামলা করে বিজেপির ঘুম ওড়াবে।