মঙ্গলবার আদালতের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঘরের এক কোণে গিয়ে বসে থাকার শাস্তি পেলেন এম নাগেশ্বর রাও। ছবি: সংগৃহীত।
আদালত অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত তো হলেনই। পাশাপাশি, এক লক্ষ টাকা জরিমানা এবং সুপ্রিম কোর্টের কড়া ধমকও খেলেন সিবিআইয়ের সদ্য প্রাক্তন অন্তর্বর্তী প্রধান এম নাগেশ্বর রাও। এতেই শেষ নয়, আজ আদালতের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঘরের এক কোণে গিয়ে বসে থাকার শাস্তিও পেলেন। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নির্দেশে মঙ্গলবার নজিরবিহীন এই ঘটনার সাক্ষী থাকল সুপ্রিম কোর্ট।
এম নাগেশ্বর রাওয়ের পাশাপাশি সিবিআইয়ের অতিরিক্ত আইনি পরামর্শদাতা ভাসুরণ এস-কেও আদালত অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে সুপ্রিম কোর্ট। দু’জনের উদ্দেশ্যেই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, “যান, আপনারা দু’জনেই আদালতের এক কোণে গিয়ে বসে থাকুন। এবং আদালত শেষ না হওয়া পর্যন্ত উঠবেন না।”
বিহারের মুজফ্ফরপুরে একটি আবাসিক হোমে শিশুদের যৌন হেনস্থার তদন্তে গাফিলতিতে ক্ষুব্ধ সুপ্রিম কোর্ট এ দিন সিবিআইকে আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করে। এ দিন ওই দু’জনকেই জবাবদিহির জন্য তলব করেছিল আদালত। অলোক বর্মা বনাম রাকেশ আস্থানার দ্বৈরথের সময় সিবিআইয়ের অন্তর্বর্তিকালীন প্রধান নিযুক্ত হন নাগেশ্বর রাও। দায়িত্বে এসেই রাতারাতি এক ঝাঁক আধিকারিকের সঙ্গে মুজফ্ফরপুরের আবাসিক মহিলা কাণ্ডের তদন্তকারী অফিসার তথা সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর এস কে শর্মাকেও সিআরপি-তে বদলির নির্দেশ দেন তিনি। অথচ ওই মামলার সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, তদন্তকারী অফিসারকে সরানো যাবে না। তাতেই ক্ষুব্ধ হয় সুপ্রিম কোর্ট। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।
আরও পড়ুন: রাফাল চুক্তির আগেই ফরাসি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন অনিল অম্বানী: রিপোর্ট
যদিও এ দিন হাজিরা দেওয়ার আগেই গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে নাগেশ্বর রাও জানিয়েছিলেন, “আদালতের নির্দেশ অবমাননা করার কথা তিনি স্বপ্নেও ভাবতে পারেন না।” এ নিয়ে নিজের ভুল স্বীকার করে আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনাও করেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, ইচ্ছে করে এমন ভুল করেননি।
আরও পড়ুন: দাউদাউ জ্বলছে চারপাশ, ৫ তলার জানলা দিয়ে শিশু আঁকড়ে ঝাঁপ মায়ের, মৃত্যু দু’জনেরই
এই মামলায় নাগেশ্বর রাওয়ের আইনজীবী তথা অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালও শীর্ষ আদালতকে অনুরোধ করেন যাতে নাগেশ্বর রাওয়ের আবেদনপত্র গ্রহণ করে তাঁকে এবং ভাসুরণকে কেবলমাত্র হুঁশিয়ারি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তবে কোনও কথাতেই টলানো যায়নি শীর্ষ আদালতকে। সুপ্রিম কোর্টের এক নম্বর কক্ষে মঙ্গলবার সারা দিনই বসে থাকতে হবে এম নাগেশ্বর রাও এবং ভাসুরণকে।