বিহারে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে কঠোর পদক্ষেপের আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার।
আজ প্রদেশ জেডিইউ কার্যালয়ে তিনি বলেন, ‘‘ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক মামলা দায়ের করা হবে। কাউকে রেয়াত করা হবে না।’’ মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরই এ সংক্রান্ত তদন্ত অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারবিভাগীয় কমিটিকে দিয়ে করা হবে বলে ঘোষণা করে বিহার বিদ্যালয় শিক্ষা সমিতি। সংস্থার চেয়ারম্যান লালকেশ্বর প্রসাদ সিংহ বলেন, ‘‘পটনা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ঘনশ্যাম প্রসাদ তদন্ত কমিটির প্রধান হবেন। কমিটিতে থাকবেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জে পি শ্রীবাস্তব এবং প্রাক্তন আইপিএস অফিসার মিঠু প্রসাদ। কমিটির অধ্যক্ষ প্রয়োজন মনে করলে, শিক্ষাবিদ হিসেবে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যকে তদন্ত কমিটিতে রাখতে পারবেন। কমিটিকে দ্রুত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।’’
বিহারে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মেধা তালিকায় প্রথম দিকে থাকা ছাত্রছাত্রীদের যোগ্যতা নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠে। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ছড়িয়ে যায়। তার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার গোটা বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট চেয়ে পাঠান।
বৈশালীর ভগবানপুরে আরজেডি নেতা বাচ্চাপ্রসাদের বিষুণ রায় কলেজের ছাত্রী রুবি রায় এবং ছাত্র সৌরভ শ্রেষ্ঠ যথাক্রমে কলা ও বিজ্ঞান শাখায় প্রথম হলেও, টিভি চ্যানেলের ‘স্টিং অপারেশনে’র পর তাঁদের যোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। এর পরেই বিদ্যালয় শিক্ষা সমিতি ফের পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকার নেয়। তাতে সৌরভ-সহ দুই ছাত্রকে অকৃতকার্য বলে ঘোষণা করা হয়। যদিও সেই পরীক্ষায় হাজির হননি কলা শাখায় প্রথম রুবি রায়। বিশুন রায় কলেজের স্বীকৃতি সাময়িক বাতিল করা হয়েছে।
বিদ্যালয় সমিতির সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্ত কমিটি এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে। রিপোর্ট পাওয়ার পরে ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে। কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘‘বিহারের শিক্ষা ব্যবস্থার বদনাম হয়েছে। শুধু ছাত্রছাত্রী বা কলেজ কর্তৃপক্ষের উপরে দোষ চাপিয়ে ছাড় দিলে হবে না। শিক্ষা দফতর এবং বিদ্যালয় শিক্ষা সমিতির ভিতরে দুর্নীতির শিকড় রয়েছে। তারা যেন ছাড় না পায়।’’ লালকেশ্বরবাবু অবশ্য এই অভিযোগ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। শিক্ষামন্ত্রী অশোক চৌধুরিও তদন্ত রিপোর্ট আসার আগে কিছু বলতে নারাজ বলে জানান।