কর্নিয়া সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় রাসায়নিক নেই আইব্যাঙ্কে। সারা জীবন চক্ষুদানের পক্ষে সওয়াল করে যাওয়া ধানবাদের শেফালি দত্ত জানতেই পারলেন না, মৃত্যুর পরে তাঁর চোখ দু’টো কাজেই লাগল না। দেহের সঙ্গে পুড়ে ছাই হয়ে গেল চোখ দুটোও।
বার্ধক্যজনিত কারণে ধানবাদের অজন্তা পাড়ার বাসিন্দা শেফালিদেবীর সম্প্রতি মৃত্যু হয়। তাঁর মেয়ে সুজাতা বলেন, ‘‘চক্ষুদানের ব্যাপারে মা খুবই সচেতন ছিলেন। মায়ের মহৎ ইচ্ছাটা পূরণ করা গেল না। খারাপ লাগছে।’’
ধানবাদ শহরে চক্ষুদান ও দেহদান নিয়ে বহু বছর ধরে জন-সচেতনতার প্রচার চালাচ্ছে বেঙ্গলি ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। সোসাইটির সহ-সচিব কাঞ্চন দে বলেন, ‘‘আমরা শেফালি দেবীর চোখ সংগ্রহ করার ব্যাপারে ধানবাদের পাটলিপুত্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইব্যাঙ্কে যোগাযোগ করি। ওরা জানিয়ে দেয়, কর্নিয়া সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় রায়ায়নিক কার্নিসোল নেই। চোখ নেওয়া যাবে না।’’ সোসাইটির কর্তাদের অভিযোগ, এ বারই প্রথম নয়। এর আগেও একই কারণে আরও কয়েক জনের চক্ষুদান সম্ভব হয়নি। কাঞ্চনবাবু বলেন, ‘‘আমাদের বারবার অপ্রস্তুত হতে হচ্ছে। চক্ষুদান করে গিয়েছেন, এ রকম কোনও ব্যক্তির মৃত্যুর পরে তার পরিজনরা ফোন করলে কিছুই করতে পারছি না।’’
পাটলিপুত্র মেডিকেল কলেজের চক্ষু বিভাগের চিকিৎসক তথা আই ব্যাঙ্কের ভারপ্রাপ্ত প্রধান রজনীকান্ত সিনহা বলেন, ‘‘হায়দরাবাদের আইব্যাঙ্ক অ্যাসোসিয়েশন থেকে ওই রাসায়নিক আনা হয়। ওদের অগ্রিম টাকা না দিলে তা মেলে না। কিন্তু এর জন্য ফান্ড পেতে কিছু অসুবিধা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরে চিঠি লিখে বিষয়টি দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করছি।’’
বাঙালি সংগঠনটি ঠিক করেছে, এ বার আর হাসপাতালের উপর নির্ভর না করে নিজেরাই চাঁদা তুলে ওই কেমিক্যাল কিনে আইব্যাঙ্ককে দেবে। চালানো হবে তাদের চক্ষুদান ও দেহদানের সচেতনতা প্রচারও।