ডাকটিকিট প্রকাশ নিয়ে কত অনুষ্ঠানই না হয়! যাঁর নামে ডাকটিকিট, তাঁকে নিয়ে চলে বক্তৃতা। সংসদ ভবন, ভারতীয় রেলের শতবর্ষের মতো কত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়েছে। জাতীয় পশু, জাতীয় পাখি— সে সবও রয়েছে তালিকায়। তাই নিজের বা পরিবারের সদস্যদের ডাকটিকিটে দেখলে কে না রোমাঞ্চিত হবেন!
কাছাড়ে কিছু দিন ধরে জনপ্রিয়তা বাড়ছে ভারতীয় ডাক বিভাগের ‘মাই স্টাম্প’ প্রকল্পের। ডাকবিভাগে ৩০০ টাকা জমা দিয়ে যে কেউ নিজের বা পরিবারের কারও নামে ডাকটিকিট ছাপানোর আর্জি জানাতে পারেন। বিনিময়ে ১২টি ৫ টাকার টিকিট দেবে ডাকবিভাগ। তাতে ছবি হবে আর্জি মতো। এ অবশ্য নতুন কোনও বিষয় নয়। কিন্তু দক্ষিণ অসমে এর তেমন জনপ্রিয়তা ছিল না। গত বছর শিলচরে ডাকটিকিট প্রদর্শনীর সময় ‘মাই স্টাম্প’-এর কাউন্টার বসে।
নিজের পছন্দে ডাকটিকিট ছাপানোর কথা জেনে অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করেন। সেই থেকে বাড়তে থাকে ‘মাই স্টাম্পে’র কদর। প্রদর্শনীর সময়ই ২৬ জন ৩০০ টাকা করে জমা করেন। পরেও তা চলতে থাকে। সৃজয় চক্রবর্তীর জন্মদিনে যেমন মা-বাবা ডাকটিকিটেই চমক দেন।
আজ নিজের প্রয়াত মায়ের ছবি দেওয়া ডাকটিকিট দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মালুগ্রামের তমোজিৎ ভট্টাচার্য। গত বছর তাঁর পিতা প্রয়াত তারাপদ ভট্টাচার্যের জন্মশতবর্ষ পালিত হয়। প্রাক্তন বিধায়ক তারাপদবাবুর নামে স্মারক বক্তৃতাও হয়। তমোজিৎবাবু বলেন, ‘‘তখনই মনে হয়েছিল, মায়ের জন্যও কিছু করা প্রয়োজন। তখনই ডাকটিকিটের কথা মাথায় আসে।’’ এ দিনই ডাকবিভাগের পক্ষ থেকে শিলচর বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা অরুণা ভট্টাচার্যের ছবিযুক্ত ডাকটিকিট বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। ডাক বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১৫০ জন ‘মাই স্টাম্প’ প্রকল্পে ডাকটিকিট ছাপিয়েছেন।
একই সঙ্গে বাড়ছে ‘ফিলাটেলি ডিপোজিট অ্যাকাউন্টে’র সংখ্যাও। তবে ডাকটিকিট পাওয়ার এই অ্যাকাউন্ট দক্ষিণ অসমে কাছাড় জেলাতেই সীমিত। মোট ৬৪ জনের ৪০ জনই কাছাড়ের বাসিন্দা। ৩০০ টাকা দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুললে ভারতীয় ডাকবিভাগ যখন যে ডাকটিকিট প্রকাশ করে তা অ্যাকাউন্ট-হোল্ডারের ঠিকানায় নিজস্ব খরচে পাঠিয়ে দেয়।